জাপানের সোয়া ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ সহায়তা

একনেক সভা আজ, ব্যয় বাড়তে পারে ১৬ হাজার কোটি টাকা ।। মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাপান। বর্তমান বিনিময় হার (১ ডলারে ৮৫.৮০ টাকা) অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১০ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। পাশাপাশি ঢাকায় পাতাল রেল নির্মাণে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ প্রকল্পসহ কোভিডের সহায়তায় আরও ১৪৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশটি। সব মিলিয়ে ২৬৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের মূল্যমানে ২২ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে দুই পক্ষের চুক্তি হয়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বিনিময় নোট চুক্তি করেন। এরপর ইআরডি সচিব ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইয়ুহো হায়াকাওয়া চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এদিকে আজ অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা। সভায় প্রকল্পটির ব্যয় ১৬ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে সংশোধন করা হতে পারে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাপান ৪২তম ঋণ প্যাকেজের আওতায় মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং ঢাকায় পাতাল রেল নির্মাণে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নে এবং কোভিডের জরুরি বাজেট সহায়তা হিসেবে এ অর্থ দিচ্ছে। ঋণের টাকা ১০ বছরের রেয়াতকালসহ ৩০ বছরে মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ সুদসহ পরিশোধ করতে হবে জানানো হয়। এর আগে গত বছরের অগাস্টে ৪১তম ঋণ প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে রেকর্ড ৩২০ কোটি ডলারের ঋণ দেয় জাপান সরকার।
জানা যায়, ৪২ তম ঋণ প্যাকেজের মধ্যে ‘মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার’ প্রকল্পের জন্য দেওয়া হচ্ছে ১২০ কোটি ডলার। প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটিতে জাপান যোগান দিচ্ছে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে ৪ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৪৯ শতাংশ।
অন্যদিকে এ ঋণের অর্থ থেকে ম্যাস এমআরটি ১ (পাতাল রেল) প্রকল্প বাস্তবায়নে দেওয়া হচ্ছে ১১০ কোটি ডলার। এ প্রকল্পের আওতায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রুট (বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর) ও পূর্বাচল রুটে (নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো) পাতাল রেল স্থাপন করা হবে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৩১ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ এ মেট্রোরেলের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা এবং জাইকা ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা যোগান দেবে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯ সালে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটিতে এ পর্যন্ত উভয় রুটের সব বিস্তারিত সমীক্ষা, জরীপ ও মূল নকশার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে বিস্তারিত নকশার কাজ চলমান আছে। এছাড়া একক এ ঋণ প্যাকেজের আওতায় ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস রেসপন্স’ প্রকল্পের আওতায় বাজেট সহায়তা হিসেবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা উত্তরণে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের যোগান দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৩ সালের ঐতিহাসিক জাপান সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপিত হয়। এটি ছিল অংশীদারত্বের সূচনা, যা দিনে দিনে শক্তিশালী হয়েছে। দেশের চলমান বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটকীয়তার পর শেষ বলে হার
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি নেতারা এখন ডাক্তার হয়ে গেছেন : তথ্যমন্ত্রী