চীন-সৌদি আরব ঘনিষ্ঠতায় যুক্তরাষ্ট্রের কী?

| রবিবার , ২ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:০০ পূর্বাহ্ণ

চীন নেতৃত্বাধীন একটি এশীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ব্লকে যোগদানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে সৌদি আরব। সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) নামের সেই ব্লকের সংলাপ অংশীদারের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে দেশটিকে। বিশ্বজুড়ে সংস্থাটি তার প্রসার ঘটাচ্ছে। এসসিও মূলত সাবেক সোভিয়েতভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর একটি জোট, যেখানে রাশিয়া ও চীন ছাড়াও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভারতপাকিস্তানও রয়েছে। সৌদি আরব শেষ পর্যন্ত এর পূর্ণ সদস্যপদ পেতে পারে।

সিএনএন জানিয়েছে, ইদানীং মধ্যপ্রাচ্যে চীনের ক্রমবর্ধমান ভূমিকায় শঙ্কিত ওয়াশিংটন। কেবল মার্চেই পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে একটি যুগান্তকারী চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে বেইজিং, যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে গত ২৭ মার্চ চীনের রোংশেং পেট্রোকেমিক্যালের ১০ শতাংশ শেয়ার কিনতে ৩৬০ কোটি ডলারের চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে সৌদির আরব। চুক্তির আওতায় ২০ বছর মেয়াদে দিনে ৪ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল চীনা ওই কোম্পানির কাছে বিক্রি করবে সৌদি আরামকো। এর মাধ্যমে চীনের সঙ্গে জ্বালানি সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করছে দেশটি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান বিভাজনের বিশ্বে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সৌদি আরব ও অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বৈচিত্র্যময় করার পথ বেছে নিচ্ছে। তবে এখনও বেইজিং সে অঞ্চলে মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার পথ থেকে অনেকটা দূরেই রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

সৌদি বিশ্লেষক ও লেখক আলি শিহাবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এত দিনের একমুখী সম্পর্ক এখন শেষ হয়ে গেছে। আমরা আরও বৈচিত্র্যময় সম্পর্কের মধ্যে চলে এসেছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী; কিন্তু চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং অন্যদের সঙ্গেও সম্পর্ক এখন সমান শক্তিশালী।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতিভিত্তিক কার্যক্রমে মনোযোগ এবং আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়ে খেলার প্রতি বেইজিংয়ের অনীহার কারণে মধ্যপ্রাচ্য চীনযুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র হয়ে উঠার সম্ভাবনা কম। ফলে সৌদিচীন সম্পর্কও পূর্ণাঙ্গ জোটে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। চীনে জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী সৌদি আরব। সৌদির তেল রপ্তানির সব থেকে বড় গন্তব্যও চীন। তথাপি সৌদি আরবের অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবদ্ধ; কারণ তেলের বাণিজ্য ডলারের সঙ্গে যুক্ত এবং তেল বিক্রিও হয় ডলারে। সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা অবকাঠামোও আমেরিকান সমরাস্ত্রের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর তাণ্ডবে নিহত অন্তত ৪, আহত বহু
পরবর্তী নিবন্ধজাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব নিল রাশিয়া