চিত্রশিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন মনসুর উল করিম

চবি প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৬ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

‘মনসুর স্যার সব সময় শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক ছিলেন। শিক্ষার্থীদের যেকোনো কাজে তিনি নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করতেন। চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য তিনি সবসময় উৎসাহ দিতেন এবং সর্বাত্মক সহায়তা করতেন। চিত্রকর্মে নতুন নতুন বিষয়গুলো তুলে আনতেন। কম খরচে ছবি আঁকার জন্য স্যার আমাদের রং নিজ হাতে বানানো শিখিয়েছেন। এছাড়া রংয়ের বিভিন্ন ব্যবহার শিখিয়েছেন।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর মনসুর উল করিম সম্পর্কে কথাগুলো বলেছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক সুফিয়া বেগম। মনসুর উল করিমের মৃত্যুতে দু:খ প্রকাশ করেন সুফিয়া বেগম। এসময় স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা স্যারের বাসায় গিয়ে প্রায় সময় ছবি আঁকতাম। কোথাও কোনো ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার খবর পেলেই স্যার সেখানে অংশগ্রহণ করতে অনুপ্রেরণা দিতেন এবং প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই পরামর্শ দিয়ে যেতেন।’ গুণী এই শিল্পীর মৃত্যুতে দেশ একজন সৃজনশীল চিত্রকর্মী হারিয়েছে উল্লেথ করে সুফিয়া বেগম বলেন, ‘স্যারের উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্মের মধ্যে ৮০ দশকের পর কাঠ পেন্সিল দিয়ে আঁকা পূর্ণাঙ্গ চিত্রকর্ম রচনা করে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে প্রদর্শন করেছিলেন। যেটা খুব সাড়া জাগিয়েছিল। এরপর নিজস্ব শিল্পশৈলীর মৌলিকত্ব তুলে ধরে ‘রেখা রঙ্গে আলোর নাচন’ শিরোনামে আরেকটি প্রদর্শনী চট্টগ্রাম শিল্পকলাতে প্রদর্শিত হয়েছিল। আবার ছয় ঋতু নিয়ে ‘আবহমান বাংলা’ শৈশব নিয়ে করা ‘শৈশবের গান’।
আরও কবি ও কবিতা, উদাসীন জানালা, বৃষ্টির দহন মনসুর স্যারের বিখ্যাত চিত্রকর্ম। এছাড়া পদ্মার পাড়ের গ্রাম্য জীবন, খরস্রোতা নদীর সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা মানুষের জীবন নিয়ে ‘পদ্মা পুরাণ’ নামে একটি চিত্রকর্ম রয়েছে। জীবনের শেষের দিকে জীবনবোধের অনুভূতি নিয়ে তৈরি ‘মাই ডেস্টিনেশন, মাই সয়েল’ নামে স্যারের একটি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে।’
চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, ‘মনসুর স্যার একজন অতুলনীয় শিল্প শিক্ষক ছিলেন। শিল্পের যত রকম টেকনিক আছে সবকিছু শেখানোর চেষ্টা করতে শিক্ষার্থীদের। চিত্রশিল্পে নতুন মাত্রা এনেছিলেন মনসুর উল করিম স্যার।’ প্রণব মিত্র বলেন, ‘অবসরে যাওয়ার পর স্যার নিজ জেলা রাজবাড়ীর রামকান্তপুর স্বর্ণশিমুল তলায় তিনি গড়ে তোলেন ‘বুনন আর্ট স্পেস’ যার উদ্দেশ্য ছিল চিত্রশিল্পী গড়ে তোলা।
‘বুনোন আর্ট প্রেসে’ তিনি পদ্মা পাড়ের মানুষ ও তাদের জীবন-জীবিকা নিয়ে কাজ করছিলেন। স্যারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। উনাকে হারিয়ে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হল।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুবিধা বঞ্চিতদের পাশে লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলী
পরবর্তী নিবন্ধচান্দগাঁও-চকবাজারে ১৯ মামলা, ২০ হাজার টাকা জরিমানা