চলমান লকডাউন ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত

শপিংমল-গণপরিবহন খোলা দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১২ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিদ্যমান লকডাউন তথা বিধিনিষেধের মধ্যে ১২ এপ্রিল ও ১৩ এপ্রিল দোকানপাট ও শপিংমল আট ঘণ্টা খোলা রাখা এবং সিটি এলাকায় সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গতকাল ‘করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে শর্তসাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ বর্ধিতকরণ’ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে।
এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে শর্তসাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ৪ ও ৮ এপ্রিলের নিষেধাজ্ঞা ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা পর্যন্ত বাড়ানো হলো। এর আগে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে গত ৪ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরে দাবির মুখে ৮ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল
এবং সিটি এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণপরিবহন চালুর অনুমতি দেওয়া হয়। খবর বাংলানিউজের।
৮ এপ্রিলের আদেশে বলা হয়, ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া, কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম যথারীতি চলমান থাকবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের সিনিয়র সচিব/সচিবদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সার্বিক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই সময়ে জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে অফিস, গণপরিবহনসহ সব ধরনের যান চলাচল, দোকানপাট-শপিংমল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। তবে নিত্যপণ্যের দোকান ও জরুরি সেবার যানবাহন চলাচলের সিদ্ধান্ত রাখা হয়।
কিন্তু অফিস খোলা রেখে গণপরিবহন বন্ধে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির পর ৭ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন চালু করা হয়। তবে বিদ্যমান লকডাউন ১৪ এপ্রিল থেকে আরও কঠোর করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এদিকে এবার অফিস-আদালত ও গণপরিবহন একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। তবে চালু থাকবে শিল্প-কারখানা।
বিডিনিউজ জানায়, চলমান ‘লকডাউনের’ ধারাবাহিকতা ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রথম দফার লকডাউন শেষ হওয়ার আগে গতকাল সকালে নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আজ শেষ হচ্ছে প্রথম দফার লকডাউন, আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হবে অপেক্ষাকৃত কঠোর ও সর্বাত্মক লকডাউন। প্রথম ধাপের চলমান লকডাউনের ধারাবাহিকতা চলবে ১২ ও ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ধারাবাহিকতায় সরকার লকডাউন ঘোষণা করে। ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন, এ সময় জরুরি সেবা ছাড়া সকলকে ঘরে অবস্থান করতে হবে আমাদের বৃহত্তর স্বার্থে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসহ সরকার সময়মতো প্রজ্ঞাপন জারি করবে।
তিনি আরো বলেন, আগামীকাল সোমবার এবং পরশু মঙ্গলবার যথারীতি শুধুমাত্র দেশের সিটি করপোরেশন এলাকায় শর্তসাপেক্ষে সমন্বিত ভাড়ায় অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহন চলবে এবং দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত। জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে শেখ হাসিনা সরকার ঢাকাসহ অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকাধীন সড়কে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিআরটিসিসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনসমূহ সরকারি নির্দেশনা মেনে পরিবহন চালাবেন।
ওবায়দুল কাদের দেশের মানুষকে এই সংকটকালে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি সামান্য অবহেলা আমাদের চিরচেনা জীবন থেকে ছিটকে দিতে পারে। জীবনের পাশাপাশি জীবিকার চাকা সচল রাখতে আমাদের আস্থার ঠিকানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন, ভরসা রাখুন স্রষ্টার প্রতি। সকলের প্রচেষ্টা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিশ্চয়ই এ মহামারি থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে আবারও ফিরবে পৃথিবী নিজ রূপে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে টিকা নিলেন সাড়ে ১০ হাজার জন
পরবর্তী নিবন্ধএকদিন পর আবার মৃত্যুর রেকর্ড