চট্টগ্রামের ১৪ নেতা অংশ নেবেন আজ

বিএনপির ধারাবাহিক বৈঠক

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

কেন্দ্রের কাছে বিএনপি’র চট্টগ্রামের সাংগঠনিক চিত্র তুলে ধরা হবে আজ। একইসঙ্গে দলটির তৃণমূল কর্মীরা কেন্দ্রের কাছে কি প্রত্যাশা করেন সেটাও উপস্থাপন করা হবে।
সারাদেশের সাংগঠনিক চিত্র জানার লক্ষ্যে দ্বিতীয় দফায় তিনদিনের ধারাবাহিক বৈঠক করছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। গতকাল শুরু হওয়া ওই বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে আজ বুধবার চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক কমিটি তথা চট্টগ্রাম মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলার তিনজন আহবায়কও অংশ নিবেন। তারা চট্টগ্রামের সাংগঠনিক চিত্র তুলে ধরবেন। অবশ্য ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় বিএনপিতে স্থান পাওয়া ১১জন নেতারও অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সমস্যা থাকলে তা সমাধানেরও নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের বৈঠকটির পর বিএনপির র্শীষ নেতারা ভেতরে ভেতরে আলোচনা করেন- সরকার মধ্যবর্তী নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয়নি তো? তাছাড়া সামনে নির্বাচন কমিশনও গঠন করার কথা রয়েছে। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারকে চাপ দিতে দলের সম্ভাব্য কর্মসূচিকে ঘিরে বিএনপি তৃণমূলের প্রকৃত চিত্র জানার উদ্যোগ নেয় বিএনপি। এর অংশ হিসেবে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ধারাবাহিক বৈঠক হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর সারা দেশের সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি-আহবায়কদের সাথে মতবিনিময় করা হচ্ছে। আজ চট্টগ্রাম বিভাগের সাথে মতবিনিময় করার কথা রযেছে।
জানা গেছে, আজকের বৈঠকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, উত্তর জেলার আহবায়ক গোলম আকবর খোন্দকার ও দক্ষিণ জেলার আহবাক আবু সুফিয়ান অংশ নিবেন। তারা তিন সাংগঠনিক জেলার চিত্র উপস্থাপন করবেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য হিসেবে স্থান পাওয়া সরওয়ার জামাল নিজাম, গাজী শাহাজাহন জুয়েল, মোস্তফা কামাল পাশা, এম শামসুল আলম, কামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ চৌধুরী, উদয় কুমার বড়ুয়া, সুশীল বড়ুয়া, আনোয়ার হোসাইন, মীর হেলাল, হুম্মাম কাদের চৌধুরীরও অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
বৈঠকে কী আলোচনা হবে জানতে চাইলে নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত এবং সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হবে। নির্বাচন নিয়ে তো কথা উঠেছে। এখন সরকার মধ্যবর্তী নির্বাচন দিবে নাকি আরো দুই বছর পর দিবে একটা বিষয়। দুই বছর পরে হলে তো দেরি আছে। মধ্যবর্তী দিলে আমাদের কি করতে হবে সেসব নিয়ে আলোচনা হবে। তবে এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ও আছে। আমরা তো ভোটের অধিকার নিশ্চিতের কথা বলে আসছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
সাংগঠনিক কার্যক্রম বিষয়ে কি আলোচনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংগঠনকে এগিয়ে নিতে আমাদের গৃহীত কার্যক্রমগুলোর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হবে। থানাগুলো গুছানোর জন্য তো কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে আমরা চাইব, অন্তত আমাদের যে ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড আছে সেখানে যেন সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হয়। কারণ ওয়ার্ডগুলোকে সংঘটিত করতে পারলে আন্দোলন হোক বা নির্বাচন হলে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে। অর্থাৎ তৃণমূল যে কাউন্সিলর চায় সেটা জানাবো কেন্দ্রকে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান আজাদীকে বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম ও সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের প্রস্তাব থাকবে তৃণমূলের চাওয়া যেন পূরণ করা হয়। তৃণমূলের প্রস্তাবনা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংগঠনিকভাবে দল গুছানো আছে। কিন্তু প্রশাসনের বাধা, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার-হয়রানির জন্য স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যাচ্ছে না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাই আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই। তৃণমূল আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের পক্ষে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনোয়ারা এবং সাতকানিয়া ছাড়া বাকি উপজেলাগুলোতে আহবায়ক কমিটি দিয়েছি। বাকি এ দুটিতেও শীঘ্রই দেয়া হবে। এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যম কমিটি করা হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা সবসময় প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, গত বছরের (২০২০) ২৩ ডিসেম্বর বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর ও উত্তর জেলার সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা করা করা হয়। ওইদিন নগরে ডা. শাহাদত হোসেনকে আহবায়ক ও আবুল হাশেম বক্করকে সদস্য সচিব করে ৩৯ সদস্যের এবং উত্তর জেলায় গোলাম আকবর খোন্দকারকে আহবায়ক করে ৪৩ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নগর কমিটিতে ১৩ জন যুগ্ম আহবায়ক থাকলেও উত্তর জেলায় কাউকে পদটিতে রাখা হয়নি। এমনকি সদস্য সচিবও রাখা হয়নি সেখানে। এর আগে ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর আবু সুফিয়ানকে আহবায়ক এবং মোস্তাক আহমেদ খানকে সদস্য সচিব করে ৬৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধবাসেই সন্তান প্রসব