‘গৃহহীন’ শব্দটি অতীতে পরিণত করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

‘প্রত্যাবাসনেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান’

| বৃহস্পতিবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

আবাসনহীনতাকে ‘অভিশাপ’ উল্লেখ করে কেউ গৃহহীন থাকবে না এমন বিশ্ব গড়তে রাষ্ট্রনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে গতকাল বুধবার নিউ ইয়র্কে ‘টেকসই আবাসনের উপর আয়োজিত ইউএন-হ্যাবিটেটের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য আবাসন প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। নাগরিকদের জন্য টেকসই ও বাসযোগ্য আবাসন নিশ্চিত করার বিষয়টি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব। আমাদের এমন একটি বিশ্ব গড়তে কাজ করে যেতে হবে যেখানে গৃহহীন থাকার বিষয়টি অতীত হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, একটি দেশে প্রতিটি নাগরিকের জন্য আবাসন একটি মৌলিক চাহিদা এবং এটা অন্যান্য চাহিদা পূরণের সুযোগ সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বাসা শুধু একটি থাকার জায়গা নয়। আবাসনের নিরাপত্তা একজন মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করে এবং তাদেরকে মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য উৎসাহিত করে। বাংলাদেশে জমি ও ঘরের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি আমরা শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানোর সফল ব্যবস্থা করেছি। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত ৯ম পৃষ্ঠার ৭ম কলাম
করতে কাছাকাছি কমিউনিটি ক্লিনিকের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা হয়েছে এবং শিশু ও নারীরা বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ পাচ্ছে।
উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্ব গৃহহীনতার অভিশাপে ভুগছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, আমাদের সক্ষমতা দিয়েই আমরা এই অভিশাপ দূর করতে পারি। এখানে জড়ো হওয়া আমাদের সব বন্ধু এবং অংশীদারেরা এটি বাস্তবায়নের জন্য একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে।
তিনি বলেন, দ্য নিউ আরবান এজেন্ডা (নগরায়নের নতুন বিষয়াদি) সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের একটি দরকারি রূপরেখা দিয়েছে। অংশীদার দেশগুলোতে এই এজেন্ডা বাস্তবায়নে আমাদের অবশ্যই ইউএন-হ্যাবিটাটের কার্যক্রমকে সমর্থন দিতে হবে। বাংলাদেশ এই বিষয়গুলো সামনে আনতে নিউ ইয়র্কে গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস-এর সঙ্গে কাজ করে যাবে।
সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশ সফলভাবে গৃহহীনতার সমস্যা সমাধানে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ভূমিহীন-গৃহহীনদের বিনামূল্যে জমিসহ ঘর করে দিচ্ছি। আমি আজ এখানে এসেছি সারা দেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য টেকসই ঘর নির্মাণে আমার সাফল্যের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে।
প্রত্যাবাসনেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান : এদিকে অপর এক বৈঠকে জাতিগত নিধনের শিকার রোহিঙ্গাদের তাদের দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের সমাধান করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে আরও জোরালো ভূমিকা পালনের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। নিউ ইয়র্কে মঙ্গলবার সকালে সংস্থাটির শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাতে নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলে সাংবাদিকদের এ বিসয়ে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সারাদিন প্রধানমন্ত্রী কর্মব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতে কঙবাজার ও ভাষানচরে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ইউএনএইচসিআরের বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) মিয়ানমারে ইউএনএইচসিআরের কার্যক্রম বৃদ্ধির উপর জোর দেন। এর জবাবে হাই কমিশনার জানান, তিনি শিগগিরই মিয়ানমার সফর করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের যে কথা বলেছেন, তাতে একমত পোষণ করেছেন ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর বিএনপিকে প্রতিহত করার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
পরবর্তী নিবন্ধ‘অনুমতি ছাড়া’ গাছ কেটেছে কাপ্তাই হর্টিকালচার সেন্টার