গৃহকর ইস্যুতে সরব সাধারণ সভা

বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননে জোর মেয়রের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩১ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

গৃহকর ইস্যুতে সরব ছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাধারণ সভা। গতকাল আন্দরকিল্লা নগর ভবনে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এ সভা। এতে তিনজন কাউন্সিলর হোল্ডিং ট্যাক্সের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে ভবন মালিকদের অসন্তুষ্টির কথা তুলে ধরেন। ‘গৃহকর বাড়ানো হবে না, করের আওতা বাড়ানো হবে’-বিভিন্ন সময়ে দেওয়া মেয়রের এমন বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে কোন উপায়ে গৃহকরের আওতা বাড়ানো হবে তারা তা জানতে চান। তারা বলেন, কোন পদ্ধতিতে গৃহকর সহনশীল রাখা হবে সেটা নিয়েও জনগণের প্রশ্ন আছে। এ বিষয়ে কর্মপদ্ধতি জানতে চান কাউন্সিলরগণ। বর্গফুটের ভিত্তিতে নাকি ভাড়ার ভিত্তিতে গৃহকর ধার্য হবে সেটাও জানতে চান তারা। সভায় উপস্থিত একাধিক কাউন্সিলর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেন। গৃহকর ইস্যুতে বক্তব্য রাখা তিন কাউন্সিলর হচ্ছেন প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, ৭ নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের মো. মোবারক আলী ও ৩৩ নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের হাসান মুরাদ বিপ্লব।
গৃহকর প্রসঙ্গে মেয়র তার বক্তব্যে বলেন, গৃহকর বাড়ানোর পক্ষে নই আমি। নাগরিক সন্তুষ্টি সাপেক্ষে কর নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, গৃহকর নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূলক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এই ধরনের বিভ্রান্তিতে কর্ণপাত না করে জনগণকে আস্থা রাখার অনুরোধ করেন মেয়র। তিনি বলেন, কোনো কর বৃদ্ধি করা হবে না। শুধুমাত্র করের আওতা বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগে যে স্থাপনাগুলো ছিল তা বৃদ্ধি করা হলে উক্ত অংশের কর ধার্য করা হবে। অসঙ্গতি দূর করার জন্য বিদ্যমান দুটি রিভিউ কমিটির স্থলে আরো দুটি কমিটি গঠন করা হবে। এই রিভিউ কমিটির মাধ্যমে সকল আপিল বিবেচনা করে সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণ করা হবে।
সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ করে যে সমস্ত খাত থেকে চসিকের কর আদায় হয় না তা চিহ্নিত করে কর আদায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজস্ব বিভাগকে নির্দেশনা দেন মেয়র।
জলাবদ্ধতা নিরসন : আগামী বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে খাল খননে জোর দেন মেয়র। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরো স্কেভেটর ভাড়া নিয়ে কাজে গতি বাড়াতে বলেন। তিনি চলতি শুষ্ক মৌসুমে প্রতিটি ওয়ার্ডের ছোট-বড় খাল, নালা-নর্দমা থেকে পলিথিন, আবর্জনা ও মাটি অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি আবারো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা অবৈধভাবে খাল, নালা-নর্দমা দখলপূর্বক স্থাপনা নির্মাণ করে পানি নিষ্কাশনে যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে তা তাদের স্ব স্ব উদ্যোগে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় চসিক ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে উচ্ছেদ ও জরিমানা করা হবে।
নগরীর আলোকায়ন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, অনেক সড়ক বাতি রাতে জ্বলে না বলে অভিযোগ আছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সড়ক বাতি পরিদর্শকের মাধ্যমে তদারকি করে পরের দিন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি এর ব্যতিক্রম হয় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি কাউন্সিলরদের তাদের ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় শেডের চাহিদাপত্র প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। এই শুষ্ক মৌসুমে সড়কগুলোতে লেইন মার্কিং ও জেব্রা ক্রসিংয়ের কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেন। সভায় ওয়াসাসহ সকল সেবা সংস্থা কর্তৃক কর্তনকৃত রাস্তা দ্রুততার সাথে মেরামতের জন্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
আগামী রমজান মাসকে সামনে রেখে বাজার মনিটরিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সসহ ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হবে। এছাড়া অবৈধ বাজার উচ্ছেদের ব্যাপারে চলমান অভিযান জোরদার করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর নামে হবে সড়ক
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬