গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারণ করতে হবে চসিককে

সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন ও দুর্ঘটনারোধে সুপারিশ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৯ জুন, ২০২১ at ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন ও দুর্ঘটনারোধে নগরে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারণসহ দুটি সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক)। সুপারিশ দুটির বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য সংস্থাটিকে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি এ সুপারিশ করে। অবশ্য ২০১৮ সালে পার্কিংয়ের জন্য ২৭টি স্পট চিহ্নিত করেছিল চসিকের নগরপরিকল্পনা বিভাগ। তবে নজরদারির অভাবে সেই কার্যক্রম ভেস্তে যায়। এছাড়া গত বছর সিএমপি থেকে চসিককে ২৪ দফা সুপারিশ করা হয়েছিল। যার বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি।
নগরবাসী বলছেন, শৃঙ্খলার অভাবে দিন দিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। ঘটছে প্রাণহানি। সর্বশেষ গতকালও পৃথক চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় নগরের বাকলিয়া, পাহাড়তলী, খুলশী, ইপিজেডে শিশুসহ ছয়জন মারা যায়। একইদিন মইজ্জ্যেরটেকেও সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন মারা যায়। এ অবস্থায় সড়কে শৃঙ্খলা আনয়নের দাবি জোরালো হচ্ছে।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, শহরে পার্কিং ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমাদের চিন্তা মেকানিক্যাল পার্কিং করা। সেজন্য আমরা কাজ করছি। কিছুদিনের মধ্যে ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবো। এছাড়া কুলগাঁওয়ে বাস ও ট্রাক টার্মিনাল করছি। আশা করছি, গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সড়কে শৃঙ্খলা আসবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ১১১ টি সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে ৪০টি সুপারিশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট। পরবর্তীতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায় এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। গত জানুয়ারি মাসে টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মূলত ওই সভায় সিটি কর্পোরেশনের জন্য নির্ধারিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ১৫ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চসিকে চিঠি দিয়ে বাস্তবায়ন অগ্রগতি জানাতে বলা হয়েছে।
চসিকের জন্য দুই সুপারিশ :
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চসিকের জন্য নির্ধারিত প্রথম সুপারিশ হচ্ছে, ‘গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারিত করা এবং নির্ধারিত স্থান ছাড়া গাড়ি পার্কিং না করতে বাধ্য করা। অবৈধ পার্কিং হলে আইন প্রয়োগ এবং পরবর্তীতে গাড়ি না সরালে রেকারিং করা।’ দ্বিতীয় সুপারিশ হচ্ছে, ‘মহাসড়ক সংলগ্ন শিল্প কারখানার অভ্যন্তরে নিজস্ব জায়গায় পার্কিং এবং মালামাল লোড-আনলোডের কাজ সম্পন্ন করার জন্য বাধ্য করা।’ সুপারিশ দুটি বাস্তবায়নে এক বছর সময় নির্ধারণ করা হয়।
সিএমপি’র সুপারিশ :
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সিএমপি থেকে চসিকের কাছে ২৪টি সুপারিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ষষ্ঠ সুপারিশ ছিল সড়কে জেব্রা ক্রসিং ও রোড মার্কিং এবং ট্রাফিক সাইন স্থাপন। সপ্তম সুপারিশ ছিল, নগরের শাহ আমানত মার্কেট ও জিইসি মোড়ে সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা।
সিএমপির সুপারিশ পত্রে বলা হয়, পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের জায়গা সংকুলানের অভাবে যত্রতত্র যানবাহন পার্কিং করছে। এতে নগরের যানজট নিরসনসহ সুষ্ঠু ট্রাফিক কার্যক্রম পরিচালনায় নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
ভেস্তে গেছে ২০১৮ সালের উদ্যোগও:
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ২৭টি স্পট চিহ্নিত করে পার্কিংয়ের জন্য মার্কিং করে দেয় চসিক। তখন বলা হয়েছিল, সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ সড়কেই এভাবে মার্কিং করে দেয়া হবে। তবে কিছুদিন পর অগ্রগতি দেখা যায়নি। এমনকি মুছে গেছে মার্কিংও।
এর আগে ২০১৬ সালে সিএমপি গাড়ি পার্ক করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোর একটু দূরে ২৪টি স্পট নির্ধারণ করেছিল। পরবর্তীতে স্পটের সংখ্যা বাড়ানোও হয়েছিল। এবং কিছু কিছু স্পটে সিএমপির সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িতও হয়েছিল। কিন্তু নজরদারির অভাবে সিএমপি’র নির্র্দিষ্ট করে দেয়া স্থানে গাড়ি দাঁড় করান না চালকরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপৌরকর : মেয়র সমীপে
পরবর্তী নিবন্ধনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জমিতে বাস আহত ২০