ক্লাসে ঢুকে শিক্ষিকার মাথা ফাটালো চোর

মাদ্রাসার নির্মাণ সামগ্রী চুরিতে বাধা

পেকুয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৩০ জুন, ২০২২ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

পেকুয়ায় দিন দুপুরে ক্লাস চলাকালীন একটি এবতেদায়ী মাদ্রাসায় ঢুকে ইট মেরে এক শিক্ষিকাকে আহত ও অপর দুই শিক্ষিকাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সামগ্রী চুরিতে বাধা দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আকিব (১৪) নামে এলাকার এক চিহ্নিত বখাটে চোর এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোঁয়াখালী উত্তর বটতলীয়াপাড়া এলাকার ছৈয়দ মোহাম্মদ নূরী স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিক্ষিকার নাম আনার কলি (২০)। তিনি ওই মাদরাসায় ৩ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। আহত শিক্ষিকাকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে গতকাল বুধবার বাড়িতে নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত বখাটে বটতলীয়াপাড়ার এয়ার মুহাম্মদের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার মাদ্রাসার ক্লাস চলাকালীন সময়ে এক কিশোর এসে মাদ্রাসার নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত কিছু সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শিক্ষিকা আনার কলি ৫ম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছিলেন। তিনি ওই কিশোরকে চুরি করতে বারণ করলে কিশোর প্রথমে তাকে গালিগালাজ করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এসে উত্তেজিত হয়ে ক্লাসে ঢুকে শিক্ষিকার মাথায় ইটের টুকরা ছুঁড়ে মারে। এতে শিক্ষিকা আনার কলি রক্তাক্ত জখম হন। পরে তাকে উদ্ধার এগিয়ে এলে অপর দুই শিক্ষিকাও লাঞ্চনার শিকার হন বলে জানা গেছে।

পরে আহত শিক্ষিকাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ভর্তি করা হলে তার মাথায় ৬টি সেলাই হয়েছে বলে জানান তার বড়ভাই সাজ্জাদ হোসেন। তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমার ছোটবোন আনার কলিকে এখন বাসায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানায় গিয়েছিলাম। পুলিশ আজকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক বলেন, আমি তখন মাদ্রাসায় ছিলাম না। শিক্ষিকা আনার কলি তখন ৫ম শ্রেণিতে ক্লাস করাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বখাটে আকিব মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষিকার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। এ সময় তার মাথা ফেটে যায়। তার চিৎকারে অন্য শিক্ষিকারা এগিয়ে এলে তাদেরকেও লাঞ্চিত করে। পরে বিষয়টি আমি নিজে বাদী হয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখে দেন।

আহত শিক্ষিকা আনার কলি বলেন, আকিব মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে প্রায় সময় শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করে। ঘটনার দিনে সে মাদ্রাসার নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত মালামাল চুরি করে নিয়ে যেতে চাইলে আমি বাধা দিই। সে প্রথমে আমাকে অশ্লীল গালিগালাজ করে চলে যায় এবং পরে উত্তেজিত অবস্থায় এসে ক্লাসে ঢুকেই ইট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। তখন জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষিকা আনার কলির মাথা ফেটে দেয়ার ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্ধারিত দরে মিলে না ডলার
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে পিতার মৃত্যু পুত্র হাসপাতালে