কেউ আঘাত হানলে প্রতিরোধ করুন

সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২০ আগস্ট, ২০২২ at ৭:০৩ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দেশ রচিত হয়েছে। শান্তির দেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে কেউ যেন শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সেজন্য সবসময় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় নগরীর জেএমসেন হল থেকে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে মহাশোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দল ও পক্ষ আছে যারা সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করে। তারা নির্বাচন আসলে সাম্প্রদায়িক স্লোগান দেয়, আওয়ামী লীগকে গালাগাল করে বলে আমরা হিন্দুদের দল। আমরা সব মানুষের দল, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান সব মানুষের দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রা পরিষদের আহ্বায়ক মাইকেল দে এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শিল্পপতি সুকুমার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, তারা সময়ে সময়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা চালায়। এই সাম্প্রদায়িক উসকানি যখনই যারা দিয়েছে আমাদের সরকার সবসময় কঠোর হস্তে দমন করেছে। আর নির্বাচনের সময় যারা সাম্প্রদায়িক স্লোগান দেয়, সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায়, মধুর মধুর কথা বলে, তাদেরকে আপনারা চিনেন। সুতরাং সময় আসলে তাদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকার বিনীত অনুরোধ জানাই।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মনে আছে, গত দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, আমি সেদিন অনেকটা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। পরের দিন আমি নিজে ছুটে গিয়েছি রংপুরে। কারণ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি রংপুর এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত। এভাবে দেশে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়া হয়। তিনি বলেন, এই দেশ আপনাদের, আপনারা কেউ হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না। এই দেশের মাটিতে আপনারা জন্মগ্রহণ করেছেন, কেউ আঘাত হানলে প্রতিরোধ করবেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি, আওয়ামী লীগ আপনাদের পাশে থাকবে, সরকার আপনাদের পাশে আছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শোভাযাত্রা সহকারে জন্মাষ্টমী উদযাপন চট্টগ্রামে যেভাবে হয় বাংলাদেশের আর কোথাও এভাবে হয় না। ছোটবেলা থেকে এই উৎসবে আমিও শামিল হয়েছি। চট্টগ্রাম ছাড়াও এই উৎসব অনেক জায়গায় হয়, কিন্তু এরকম জৌলুসপূর্ণ উৎসব কোথাও হয় না। সুতরাং চট্টগ্রামের এই অনুষ্ঠান অবশ্যই জাতীয় অনুষ্ঠান। জাতীয় অনুষ্ঠান বলেই গতকাল প্রধানমন্ত্রী এখানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মহানগর জন্মাষ্টমী পরিষদের সভাপতি লায়ন দুলাল চন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক লায়ন শংকর সেনগুপ্ত, জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রা পরিষদের সদস্য সচিব রতন ভট্টাচার্য্য, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল। সুমন দেবনাথ ও মিথুন মল্লিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জন্মাষ্টমী পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গৌরাঙ্গ দে, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, লীলারাজ ব্রহ্মচারী, চিন্ময় ব্রহ্মচারী, কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মহিলা কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, পরিষদ কর্মকর্তা লায়ন তপন কান্তি দাশ, প্রকৌশলী আশুতোষ দাশ, রতন আচার্য, লায়ন দিলীপ ঘোষ, শিবু প্রসাদ দত্ত, তাপস কুমার নন্দী, শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিশু ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় নতুন বিভাগ
পরবর্তী নিবন্ধসম্ভাবনার দুই মেগা প্রকল্পে এখন শুধু অপেক্ষা