শিশু ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় নতুন বিভাগ

চমেক হাসপাতাল ২০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২০ আগস্ট, ২০২২ at ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

‘শিশু ক্যান্সার ও হেমাটোলজি’ নামে আরো একটি নতুন বিভাগের যাত্রা শুরু হলো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। শিশু ক্যান্সার রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবায় ২০ শয্যার সম্পূর্ণ আলাদা এ বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম এরইমাঝে শুরু হয়েছে। এতদিন শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে একটি ইউনিট হিসেবে এর চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলছিল। তবে এখন সম্পূর্ণ আলাদা ও পূর্ণাঙ্গ বিভাগ হিসেবে শিশু ক্যান্সার ও হেমাটোলজির চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। পুরনো ভবনের দ্বিতীয় তলার বিদ্যমান শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আলাদা করে এনসিলারি ভবনের ৫ তলায় নতুন এ বিভাগ স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় এবং আক্রান্ত শিশু রোগীদের বিশেষায়িতভাবে আরো ভালো চিকিৎসা সেবা প্রদানের প্রয়াসে নতুন এ বিভাগ স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৮ আগস্ট নতুন এ বিভাগের কার্যক্রম চালু করা হয় জানিয়ে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর বিশেষ দিনটিতে শিশু ক্যান্সার রোগীদের জন্য আমরা নতুন এ বিভাগের কার্যক্রম চালু করেছি। এটি বঙ্গমাতার উদ্দেশ্যে আমাদের ক্ষুদ্র একটি নিবেদন। শুরুতে ২০ শয্যা নিয়েই বিভাগটির কার্যক্রম চালু করা হয়েছে জানিয়ে শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিম বলেন, আমরা ২০ শয্যা দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছি। বর্তমানে (শুক্রবার) ১৬ জন শিশু রোগী বিভাগে চিকিৎসাধীন (ভর্তি) রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে চারজন চিকিৎসক ও ১১ জন নার্স দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। তবে আরো জনবল প্রয়োজন। বিশেষ করে কর্মচারীর সংকট রয়েছে। শিশু ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা সেবায় বিভাগটির পরিসর বাড়াতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন বিভাগের প্রধান ও শিশু ক্যান্সার রোগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিম।
এদিকে, নতুন বিভাগটি স্থাপনে সহযোগিতা করেছে সানশাইন চ্যারিটি। বিভাগের জন্য দশটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এটি (সানশাইন চ্যারিটি) সানশাইন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমানের একটি প্রতিষ্ঠান। অবশ্য আগে থেকেই চমেক হাসপাতালের শিশু ক্যান্সার রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহসহ বিভিন্নভাবে এই চ্যারিটির মাধ্যমে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি। সাফিয়া গাজী রহমান নিজেও ক্যান্সারের রোগী ছিলেন। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে বেঁচে ফিরে আসা এই নারী ক্যান্সার সারভাইভার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে সাফিয়া গাজী রহমান আজাদীকে বলেন, ক্যান্সার জয় করার পর থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু রোগীদের জন্য কিছু একটা করার তাড়না কাজ করছিল। সেই তাড়না থেকেই আমার এ চেষ্টা। বেশ কয়বছর ধরে চমেক হাসপাতালের শিশু ক্যান্সার রোগীদের ওষুধ-যন্ত্রপাতিসহ যখন যা লাগে, তা দিয়ে সেবা-সহযোগিতা করে আসছি। এটুকু করতে পেরে নিজের ভিতরে এক ধরণের ভালো লাগা কাজ করে। নতুন এ বিভাগ চালু হওয়ায় শিশু ক্যান্সার রোগীরা আরো ভালো চিকিৎসা সেবা পাবে বলে মনে করেন তিনি।
বিভিন্নভাবে সহযোগিতায় এগিয়ে আসায় সানশাইন চ্যারিটি এবং সাফিয়া গাজী রহমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ দিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২ লাখ টাকার মাছটি আসছে চট্টগ্রামে
পরবর্তী নিবন্ধকেউ আঘাত হানলে প্রতিরোধ করুন