কীভাবে পালাবেন সেই পথ খুঁজুন, বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী

তৃণমূলের নেতারাই আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৫ মে, ২০২২ at ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, তৃণমূল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণ। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতারাই আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে নানা সমস্যা, নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে আওয়ামী লীগ। অনেক নেতা দ্বিধান্বিত ও বিচলিত হয়েছেন, অনেক নেতা দল ত্যাগ করেছেন, মূল নেতৃত্বের সাথে বেঈমানি করেছেন। কিন্তু তৃণমূল কখনো আওয়ামী লীগের সাথে বেঈমানি করে নাই।
গতকাল শনিবার নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা আজকে প্রায় সাড়ে ১৩ বছর ক্ষমতায়। সাড়ে ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের অনেকের মধ্যে আলস্য এসেছে। দলের মধ্যে সুবিধাবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আজকে আমাদেরকে ভাবতে হবে আমরা কীভাবে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব। আমি দেখতে পাই নেতা আসলে বিপুল স্লোগান হয়, সেলফি তোলার জন্য প্রতিযোগিতা হয়। কিন্তু সেই ছবি তুলে শুধু ফেসবুকে দেয়া ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্য কাজ করতে আমি দেখি না।
ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, শ্রীলঙ্কার নেতারা এখন যেভাবে পালাচ্ছে, বিএনপির নেতারা সেভাবে আগেই পালিয়ে গেছেন। তারেক রহমান ‘আমি আর রাজনীতি করব না’ মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। ঢাকায় তাদের নেতা মাহবুবুর রহমানকে তাদের দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ ধাওয়া করেছিল, জুতা নিক্ষেপ করেছিল। ৮০ সালে জিয়াউর রহমান যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যান তখন তাকেও জুতা নিক্ষেপ করেছিল। এখন নিজেরা কীভাবে পালাবেন সেটির পথ খুঁজুন।
তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভীসহ বিএনপি নেতারা পদ্মা নদীর ওপারে কীভাবে যাবেন তা দেখার অপেক্ষায় আছি। তারা কি গাড়িতে চড়ে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যাবেন, নাকি আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়ে ওপারে যাবেন সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার যখন পদ্মা সেতু করছিল, তখন বিএনপি দেশে গুজব ছড়িয়েছিল যে, পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে। তাদের গুজব সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে অনেক নিরীহ মানুষ মারা যায়। সরকার যখন ভারত থেকে করোনা টিকা নিয়ে এসে দেশের মানুষকে দেয়া শুরু করল, তখন বিএনপি গুজব ছড়াল টিকা কাজ করে না। রিজভী সাহেব বক্তব্য দিলেন, আমাদের করোনা টিকা অকেজো। পরে তিনি লুকিয়ে টিকা নিয়েছিলেন। আমাদের চট্টগ্রামের ডা. জাফরুল্লাহও বলেছিলেন টিকা নিয়ে। পরে তিনিও লজ্জা ভেঙে টিকা নেন এবং বলেন, আমার আরাম লাগছে।
তিনি বলেন, যারা শ্রীলঙ্কার তুলনা বাংলাদেশে দেয়, তারা অনেক আগেই শ্রীলঙ্কার মতো পালিয়েছিলেন। কেননা আজকের শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিতে তারাও পড়েছিলেন। তাই তারা এসব কথা বলছেন। তাদের যদি লজ্জা থাকে তাহলে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবে।
নিজেকে আওয়ামী লীগের মাইকিং করা কর্মী উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রায় ৭ কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিরূপ সমালোচনা হয় তখন সেটার প্রতিবাদে আমাদের নেতাকর্মীদের যেভাবে সরব হওয়া দরকার সেটি হতে দেখি না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো তুলে ধরার জন্য তরুণ নেতাদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামীণ জনপদে অনেক রাস্তাঘাট, কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে। সেখানে ১৩ বছর আগে কি ছিল, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কারণে কি হয়েছে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতৃণমূলের বক্তব্যে যা উঠে এল
পরবর্তী নিবন্ধমামলার অন্যতম আসামি ইন্দ্রজিত গ্রেপ্তার