তৃণমূলের বক্তব্যে যা উঠে এল

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৫ মে, ২০২২ at ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের প্রতিনিধি সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের তৃণমূলের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। বেশিরভাগ নেতার বক্তব্যে স্থানীয় এমপি এবং দলের শীর্ষ নেতারা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় এবং হাইব্রিডদের আস্ফালনের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেক সংসদ সদস্য এলাকায় সরকারের উন্নয়ন বরাদ্দে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত না করায় এবং নিজ নিজ ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে বছরের পর বছর সম্মেলন না হওয়ায় অনেকে ক্ষোভের কথা জানান কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে।
গতকাল জিইসি কনভেনশন সেন্টারে প্রতিনিধি সভায় তাদের এই ক্ষোভের কথা জানান। সভায় কালীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সার্জেন্ট জাফরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সমন্বয় নেই। আমরা সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ৫/৬টি ইউনিয়ন আছি। সভাপতির (স্থানীয় সংসদ সদস্য) নেতৃত্বে ৫/৬টি ইউনিয়ন আছে। আমাদের এমপি সাহেব হাইব্রিডদের নিয়ে এলাকায় রাজনীতি করছেন। জেলা আওয়ামী লীগ বিষয়টি জানে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা দরকার। দলের ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা দরকার।
কর্ণফুলী উপজেলার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ইঞ্জিনিয়ার এম এ ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় ওয়ার্ড কমিটির অস্তিত্ব নেই। ওয়ার্ডের সম্মেলন হয় না, উপজেলার সম্মেলন হয় না। বছরের পর বছর সম্মেলন না হওয়ায় ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতারা হতাশ হচ্ছেন। যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। আমরা চাই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হোক। দল গতিশীল হোক, তৃণমূল গতিশীল হোক। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগেও কাউন্সিলের মাধ্যমে সম্মেলন হোক।
পটিয়া উপজেলার বরলিয়া ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি উত্তম দাশ বলেন, পটিয়ায় কিছুদিন আগে একটি অঘটন ঘটেছে। হাইদগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। দলের হাইব্রিড নেতারা এভাবে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের সভাপতি মুস্তাকিম চৌধুরী বলেন, জামায়াতের দেলোয়ার হোসেন সাইদীর রায় যখন ঘোষণা করা হয়েছিল তখন সাতকানিয়ার চরতিতে জামায়াত-শিবিরের যেসব ক্যাডার তাণ্ডব চালিয়েছিল তারা এখন চরতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ওই সময় যারা আমার দোকানে হামলা করেছিল আজকে তারা দলের ছত্রছায়ায় চরতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাতকানিয়া সরকারের এত উন্নয়ন কর্মসূচি, এতে প্রকল্পের কোনো সমন্বয় নেই। এখানে সরকারের এত উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্ত দলের কোনো নেতাকর্মী জানেন না। দলের নেতাকর্মীদের কোনো উন্নয়নে সমন্বয় করা হয় না। জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারটা সাতকানিয়ার চরতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বরমা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী মিন্টু বলেন, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে উপজেলার নেতাদের উপস্থিত করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের দাবি জানাচ্ছি। দলের ত্যাগীদের মূল্যায়ন করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি জানাই।
পুঁইছড়ি ইউনিয়নের মাস্টার প্রকাশ কান্তি দাশ বলেন, আজকের প্রধানমন্ত্রী যখন বিরোধী দলীয় নেত্রী ছিলেন তখন তিনি বাঁশখালীতে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে এসেছিলেন সান্ত্বনা দেয়ার জন্য। সেদিন তিনি এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু এখনো হয়নি কেন জানতে চাই। আমিন চেয়ারম্যানের এখনো বিচার হয়নি। এখন যেভাবে বাঁশখালীতে দল চলছে তাতে কোনো সংগঠন নেই। বাঁশখালীতে সভাপতির সাথে সাধারণ সম্পাদকের সম্পর্ক নেই। হাইব্রিডে ভরে গেছে।
বরকল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাইফুর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘদিন তৃণমূলে থেকে আমার এলাকায় যেটা ফিল করছি সেটা হলো নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে।
আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল জব্বার বলেন, দলের যোগ্য নেতৃত্বকে সংগঠনের দায়িত্ব দিতে হবে। তা না হলে দল শক্তিশালী হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহালদায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ
পরবর্তী নিবন্ধকীভাবে পালাবেন সেই পথ খুঁজুন, বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী