কাল আজকাল

কামরুল হাসান বাদল | বৃহস্পতিবার , ২৯ জুলাই, ২০২১ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

জনগণের চেয়ে বড় কোনো শক্তি নেই

১৯৫৭ সালে টাঙ্গাইলের কাগমারী সম্মেলনে মাওলানা ভাসানী পশ্চিম পাকিস্তানিদের ‘ওয়ালাইকুম সালাম’ জানিয়েছিলে। এর অর্থ ছিল তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের সম্পর্কচ্ছেদের আভাস। কিন্তু মুখে এমন কথা বললেও তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার কোনো প্রস্তুতি বা পরিকল্পনা ছিল না কোনো রাজনৈতিক দলের ফলে বক্তব্যটি খুব জনপ্রিয়তা পেলেও রাজনীতিতে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি। দেশ স্বাধীন হয়েছিল এর আরও ১৪ বছর পরে। আর সে জন্য অনেক রাজনীতির চড়াই উৎরাই পথ পাড়ি দিতে হয়েছে জাতিকে। আর সে কঠিন কাজটি করতে হয়েছিল ৫৭ সালের তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে। শেখ মুজিবুর রহমান জানতেন কখন ওয়ালাইকুম সালাম বলতে হয়, কখন ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো’ বলতে হয়। এখানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার অগ্রজ ও সমসাময়িক রাজনীতিবিদদের মধ্যে পার্থক্য।
পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম ১৯৪৯ সালে। যদিও ১৯৪৮ সালের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর জেগে ওঠা বাঙালি জাতীয়তাবাদের অসামপ্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতে গিয়ে, বলতে হয় জনগণের মাঝে জাগরণ দেখে দলকে অসামপ্রদায়িক রূপ দিতে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয় ১৯৫৫ সালেই।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আওয়ামী লীগ জনগণের চাহিদা ও আবেগকে ধারণ করার ও মূল্য দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যা করতে পারেননি দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বঙ্গবন্ধু তা বাধাহীনভাবে করার চেষ্টা করেছেন। সভাপতি হয়েই তিনি ছয় দফার মতো নির্দিষ্ট লক্ষ্য মাফিক আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন এবং সে লক্ষ্যে দেশের অর্থনীতিবিদদের সহায়তায় ছয় দফা কর্মসূচি পেশ করেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন তাঁর এই কর্মসূচি আওয়ামী লীগের স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠীর বিরোধিতার সম্মুখীন হবে তবে প্রচার করতে পারলে জনগণের মাঝে তা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। তাই তিনি ছয় দফা কর্মসূচি তুলে ধরলেন পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধীদলের সম্মেলনে। যদিও সেখানেও তাঁকে প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হয়েছিল।
লাহোর থেকে ফিরে তিনি প্রথমেই নিজ দলের কিছু নেতাদের বিরোধিতার মুখে পড়েন ফলে ঢাকায় জনসভা করে ৬ দফা পেশ করা সম্ভব হয়নি। ৬ দফার পক্ষে প্রথম প্রকাশ্য জনসভা হয় চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে।
বঙ্গবন্ধু জানতেন পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণের চিত্র যদি সঠিকভাবে তুলে ধরা যায় এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায় যদি বাৎলে দেওয়া যায় তাহলে বাঙালিদের জাগিয়ে তোলা এবং তাদের আওয়ামী লীগের পক্ষে আনা কঠিন হবে না। বঙ্গবন্ধুর ধারণা সঠিক হয়েছিল। ৬ দফা কর্মসূচি খুব তাড়াতাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে সব আন্দোলন-সংগ্রাম চালিত হয়েছে ৬ দফাকে সামনে রেখে এবং এই ৬ দফাই হয়ে উঠেছিল বাঙালির ম্যাগনাকার্টা।
এই কর্মসূচি ঘোষণার মাত্র চার বছর পরেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যায়। বিশ্বের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এমন নজির নেই যেখানে একজন নেতা প্রায় এককভাবে একটি দাবি আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে একটি জাতিকে স্বাধীনতায় উদ্বুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। ৬ দফা কর্মসূচি দেওয়ার পর তার পক্ষে প্রবল জনমত দেখে বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন ‘বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ অধিকার চায়।’ কাজেই বাংলার মানুষ কখন কী চায় সেটা বুঝেই বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করতেন, রাজনীতির কৌশল নির্ধারণ করতেন। কখন ‘ওয়ালাইকুম সালাম’ বলতে হবে কখন স্বাধীনতার ডাক দিতে হবে জানতেন।
বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জনগণের স্বার্থবিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। কোনো অন্যায়কে মেনে নেননি, প্রশ্রয় দেননি। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন। সে সময় বিভিন্ন দাবিদাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলন চলছিল। বঙ্গবন্ধু ন্যায়সঙ্গত সে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এরফলে বঙ্গবন্ধুকে জেলে যেতে হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা ছাত্রত্ব হারান। সে আন্দোলনে জড়ালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হবেন জেনেও অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি, অন্যায়কে মেনে নেননি। তা না হলে বায়ান্ন সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনিই মিছিলের নেতৃত্ব দিতেন।
বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা বিরল। অনেককে তাঁর পথ অনুসরণ করতে দেখেছি। যদিও এই ধারা ক্রমশ ক্ষীয়মান হয়ে উঠছে। চট্টগ্রামে আমাদের প্রজন্ম এম এ আজিজ, জহুর আহমেদ চৌধুরী, এম এ হান্নানদের রাজনীতি দেখিনি, দেখেছি মহিউদ্দিন চৌধুরীকে। তাঁকে দেখেছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতে।
১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে যখন লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল তখন তাদের সৎকারে তিনি দিনরাত পরিশ্রম করেছেন, নিজের হাতে লাশ টেনেছেন। ১৯৯৩ সালে নৌবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের সময়ও প্রবল সাহস ও ঝুঁকি তিনি জনগণের পাশে থেকেছেন। অসহায় মানুষের মনে সাহস যুগিয়েছেন।
১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে দীর্ঘ ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে। সে সময় শেখ হাসিনার সরকার চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে একটি মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল। কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বেসরকারি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য অখ্যাত মার্কিন কোম্পানি এসভিডর সার্ভিসেস এজেন্সিকে (এসএসএ) ১৯৯ বছরের লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের মেয়র ও আওয়ামী লীগের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে বড় ধরনের আন্দোলন হয়। অসম সে চুক্তির বিরুদ্ধে মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রবল আন্দোলন ও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। যার ফলে সরকার শেষ পর্যন্ত চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়। দীর্ঘ সময় তিনি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁর সব সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, জনহিতকর ছিল তা বলা যাবে না। যেমন লালদীঘিতে সুইমিংপুল, বাকলিয়া স্কুলের মাঠে দোকান নির্মাণ, নন্দনকানন কৃষ্ণকুমারী স্কুলভবনে কম্পিউটার মার্কেট করার উদ্যোগের বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ করেছে। গোলপাহাড়ের মোড়ে গোশালায় ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনও হয়েছে। তিনি জনমত বুঝতেন বলে শেষ পর্যন্ত এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত হয়েছিলেন।
এতসব কথা লিখলাম একটি প্রসঙ্গ তুলব বলে। চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় একটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। সে লক্ষ্যে বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রেল মন্ত্রণালয় প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ চুক্তি করেছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রেলের ৬ একর জায়গা দেওয়া হচ্ছে ইউনাইটেডকে। কিছুদিন আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিআরবি এলাকায় একটি বিলবোর্ড স্থাপন করেছে। এরপর বিষয়টি জনসমক্ষে আসে এবং প্রতিবাদ জানাতে থাকে। গত কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের ১০১ বিশিষ্ট নাগরিক একটি বিবৃতি প্রদান করেন। সিআরবির প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে এবং কী কারণে এই এলাকা একটি বেসরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করা হচ্ছে তা বোঝার স্বার্থে ১০১ নাগরিকের বিবৃতির চুম্বক অংশটি তুলে ধরছি।
চট্টগ্রামের ১০১ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাহাড়ের মধ্যে প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ করতে গেলে শতবর্ষী অনেক গাছ কাটা পড়ার পাশাপাশি এখানকার সবুজ নিসর্গ ধ্বংস হয়ে যাবে। হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাবিত স্থানে রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রবের কবর, যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই মাটি শহীদের স্মৃতিধন্য। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সিআরবি তথা পাহাড়তলী ছিল বিপ্লবের সূতিকাগার। সেসব স্মৃতি সংরক্ষণে রেল উদ্যোগ নেয়নি। অথচ শহীদের কবর, শহীদের নামে কলোনি, শহীদের নামে যে সড়ক সেই জমি তারা বেসরকারি হাসপাতালকে বরাদ্দ দিয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে পরিচালিত করছেন। তার সুশাসনকে কলঙ্কিত করতে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় ষড়যন্ত্রকারী আমলা রেলের জায়গায় বেসরকারি হাসপাতাল প্রকল্পের দুঃসাহস দেখিয়েছেন। সিআরবি এলাকায় এই প্রকল্প স্থাপিত হলে সেটির নেতিবাচক প্রভাব শুধু প্রকল্পের নির্দিষ্ট স্থানেই সীমিত থাকবে না। সময়ের প্রয়োজনে এই প্রকল্প এলাকা ঘিরে নতুন স্থাপনা গড়ে উঠবে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ ঘটবে। … প্রকৃতি ও পরিবেশ বিনাশী সব কর্মকাণ্ড হবে আত্মঘাতী। চট্টগ্রামের ফুসফুস ও বুকভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার স্থানটিকে ঐতিহ্য হিসাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাই।’
এই আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলন নয়। উন্নয়নবিরোধী আন্দোলনও নয়। আন্দোলন চট্টগ্রামের ফুসফুস বলে খ্যাত সিআরবিকে বাঁচানোর, প্রকৃতিকে বাঁচানোর, চট্টগ্রােেমর ঐতিহ্যকে বাঁচানোর।এই দাবি দলমত নির্বিশেষে সবাই এককাতারে এসেছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী তো বটেই ক্ষমতাসীন দলের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ নেতা এই আন্দোলনের সঙ্গে আছেন। থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ রাজনীতি যদি জনগণের জন্য হয় তাহলে জনমতের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্যিই আজ ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতা এই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। স্বীকার করি সব মানুষের মতামত প্রদান করা বা যেকোনো পক্ষে অবস্থান নেওয়ার স্বাধীনতা আছে, অধিকার আছে। তবে তা করতে গিয়ে বিপুল জনগোষ্ঠীর মতামত বা আন্দোলনকে হেয় করা, ব্যঙ্গ করা, আন্দোলন নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেওয়া জনদরদী নেতার কাজ নয়।
জনগণের ভাষা বুঝতেন বলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনে কখনো হটকারী সিদ্ধান্ত নেননি, জনগণের রায়ের বিপক্ষে অবস্থান নেননি। আজ যারা জনমতের বিপক্ষে গিয়ে চট্টগ্রামের স্বার্থবিরোধী ও পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে লিপ্ত হবেন তাদের স্মরণ রাখতে হবে জনগণের শক্তির চেয়ে বড় শক্তি আর কোথাও নেই।
শেষ করব একটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ দিয়ে। এসএসএবিরোধী আন্দোলনের বেশ কয়েকবছর পর একদিন মহিউদ্দিন চৌধুরীকে তাঁর চশমাহিলের বাড়িতে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি কীভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলন করলেন, নেত্রী আপনাকে কিছু বলেননি? তিনি তাঁর বিখ্যাত মুচকি হাসি হেসে কানের কাছে মুখ এনে বললেন, ‘নেত্রীর গ্রিন সিগনাল না পেলে কি এত জোরালো আন্দোলন করতে পারতাম?’ আমার দৃঢ় বিশ্বাস জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। প্রকৃত সত্যটি জানলে প্রকৃতিবিনাশী ও জনমতবিরোধী এই চুক্তি বাতিল করবেন। যেভাবে এসএসএ’র সঙ্গে বাতিল করেছিলেন।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে জলাশয় কমছে আশঙ্কাজনকহারে
পরবর্তী নিবন্ধড. মইনুল ইসলামের কলাম