কালুরঘাটে ফেরি সার্ভিসের কাজে বন বিভাগের বাধা

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

বন বিভাগের আপত্তির কারণে কালুরঘাট সেতুর নিচে ফেরি সার্ভিস চালুর কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য এপ্রোচ সড়কের কাজ করতে গেলে বন বিভাগ বাধা দেয়। বন বিভাগের দাবি, এই জায়গা তারা রেলওয়ে থেকে লিজ নিয়েছে। এই কারণে ঠিকাদার ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য এপ্রোচ সড়কের কাজ করতে গেলে বন বিভাগ বাধা দিচ্ছে। এই কারণে ঠিকাদারের কাজ বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে কালুরঘাট সেতুর নিচ দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে ফেরি চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক ও জনপথ। এরই মধ্যে ফেরির জন্য এপ্রোচ রোড নির্মাণের প্রাক্কলন শেষে টেন্ডারপরবর্তী এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ এবং ফেরি সংগ্রহের কাজ চলছে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে ফেরি চালু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। ফেরি সার্ভিস চালুর মধ্যদিয়ে কালুরঘাট সেতুর উভয় পাশের যানজট স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রায় শত বছরের পুরনো জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুতে প্রতিদিন শত শত যানবাহনে অসংখ্য যাত্রী জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে চলাচল করছে। একমুখী সেতু হওয়ায় এ পাড় থেকে ওপাড় যেতে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা আজাদীকে বলেন, কালুরঘাট সেতুতে ফেরি চালু এবং এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বন বিভাগ বাধা দিচ্ছে। কাজ করতে পারছিনা। এপ্রোচ সড়কের জায়গা তাদের বলে (বন বিভাগের) দাবি করছে। তারা নাকি রেলওয়ে থেকে লিজ নিয়েছে। এখানে আগেও ফেরি ছিল। আমরা আলোচনা করছি। খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যাবে। আগামী এক মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাবে। আমরা আশা করছি ফেব্রুয়ারিতে ফেরি চালু হয়ে যাবে।

এদিকে বোয়ালখালীচান্দগাঁও আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, কালুরঘাট সেতুতে এখন বড় গাড়ি চলাচল করতে পারে না। এছাড়াও সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। যান চলাচলে মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে। ফেরি চলাচল শুরু হলে বড় গাড়িগুলো ফেরিতে যাবে। এছাড়া ছোট গাড়িও যাবে। তখন কালুরঘাট সেতুতে রেল ও ছোট গাড়ি চলাচল করবে। নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। অপরদিকে পুরোনো কালুরঘাট সেতুকে সংস্কার করে কঙবাজার রুটে ট্রেন চালানোর উপযোগী করে তোলার জন্য বুয়েটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছেন।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নতুন নকশায় কালুরঘাট সেতু তৈরিতে সম্মতি দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। নতুন নকশা চূড়ান্ত হওয়ায় এখন প্রকল্পের সারসংক্ষেপ তৈরি হবে। তারপর কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) সঙ্গে লোন এগ্রিমেন্ট হওয়ার পথে। এরপর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সেতু নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের তদারকিতে নিয়োজিত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, একনেকে অনুমোদনের পর আমরা টেন্ডারে চলে যাব। ঠিকাদার নিয়োগ হবে। পরামর্শক নিয়োগ হবে। এসব আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করতে ২০২৩ সাল চলে যাবে। পুরনো কালুরঘাট সেতুকে সংস্কার করে কঙবাজার রুটে ট্রেন চালানোর জন্য বুয়েটকে পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছে। ২০২৩ সালের আগে সেতু মেরামতের কাজ শেষ হবে। সেতু মেরামতের পর আমরা কালুরঘাট সেতু দিয়ে কঙবাজার রুটে ট্রেন চালাতে পারব। প্রথম দিকে বেশি না হলেও প্রতিদিন একটি ট্রেন চলাচল করবে। সেতুটি মেরামতের পর ছোট মিটারগেজ ইঞ্জিন দিয়ে চালানো যাবে ট্রেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন ধরনগুলোয় নজর রাখাটাই হবে আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ
পরবর্তী নিবন্ধথার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে সিএমপির নির্দেশনা