কারা পালায় জনগণ জানে : ফখরুল

| মঙ্গলবার , ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশের মানুষ সব জানেকে কোথায় পালায়, কবে পালায়, কেমন করে পালায় সবাই জানেন। গতকাল সোমবার ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে নিরব পদযাত্রার দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতে ‘আওয়ামী লীগ পালায় না’রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এরকম বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় পাশে উপস্থিত গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে দাদা (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) আছেন ভালো বলতে পারবেন। এক এগারোতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারা কারা পালিয়েছেন দেশে ছেড়েএটা সবাই জানে। তাই না। কিন্তু পালায়নি একজন। তিনি হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি (খালেদা) ওই সময়ে পরিষ্কার করে বলেছিলেন যে, বিদেশে আমার কোনো জায়গা নাই। এদেশ আমার, এই মাটি আমার। আমার জন্ম এখানে, মরলে আমি এখানেই মরব’। খবর বিডিনিউজের।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে ফখরুলের অভিযোগ, এখনও সময় আছে আপনারা ১৪/১৫ বছর ধরে এদেশের মানুষের ওপরে যে অত্যাচার করেছেন, সেই অত্যাচারে এদেশের মানুষ এখন এমন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে যে, আপনারা আর কোনো রাস্তা খুঁজে পাবেন না।

নির্মলেন্দু গুণের কবিতা আওড়ে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন যে, পালাবেন কোন দিকে? আমি বলতে চাই, নির্মলেন্দু গুণের একটা কবিতা আছে। কবিতাটা বলতে চাই, কোন দিকে পালাবে তুমি, কোনো দিকে পালাবার পথ নাই। উত্তরে উত্তর পর্বতমালা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। কোন দিকে পালাবে তুমি।

তাই এখনও বলছি, সময় আছে আমাদের যে দাবি ১০ দফা দাবি তা মানে মানে মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন, সংসদ বাতিল করুন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আবার চালু করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে এখানে নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একটা নির্বাচন যে নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে, ভোট দিতে পারবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনে উকিল আবদুস সাত্তারকে জেতাতে সরকার গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকেই নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, আপনাদের হাতে ভোট নিরাপদ কেমন করে? এই যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমাদের এমপি সাত্তার সাহেব (উকিল আবদুস সাত্তার) ছিলেন, তিনি পদত্যাগ করলেন। তারপরে উনি নিজে ভুল করে যখন আবার নির্বাচন করতে গেলেন তাকে আমরা বহিষ্কার করে দিয়েছি। এখন তাকে জয়লাভ করানোর জন্য সমস্ত নীতিমালা নৈতিকতা বাদ দিয়ে আপনারা (ক্ষমতাসীন দল) আপনাদের প্রার্থীকে প্রত্যাহার করেছেন, যে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী, যার কোনো দল নাইআসিফ (আবু আসিফ আহমেদ) তাকে দুই দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না, গুম। অর্থাৎ সাত্তারকে জেতানোর জন্য এখন সমস্ত নির্বাচন ব্যবস্থাটে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন। এই তো হচ্ছে আপনাদের (সরকার) নির্বাচনের ব্যবস্থা। এখন আপনারা মাগুরার কথা বলেন। ‘মাগুরার দাদা’ বানিয়েছেন আপনারা ব্রাক্ষণবাড়িয়াকে। ‘নিরব’ পথযাত্রার কারণও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার আদায়, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনাকে এর লক্ষ্য হিসেবে তুলে ধরেন।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা দাবিতে দুপুর আড়াইটায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে যাত্রাবাড়ীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে গোল চত্বর থেকে জুরাইনের রেলগেইট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার পথে দেড় ঘণ্টার ‘নিরব পথযাত্রা’ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। যাত্রাবাড়ীর ব্যস্ততম এ সড়কে পথযাত্রা উপলক্ষে নেতাকর্মীদের বড় জমায়েতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

পথযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ফখরুল ‘নিরব পথযাত্রাকে দুবর্লতা ভাববেন না’ উল্লেখ করে বলেন, আমরা ঢাকা শহরে পথযাত্রা করছি। আমরা প্রতিটি কর্মসূচি আমাদের শান্তিপূর্ণ। এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে কেউ দুবর্লতা মনে করবেন না। এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিলে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। পথযাত্রায় বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, হাবিবুর রহমান হাবিব, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, মোহাম্মদ মোহন, হাবিবুর রশীদ হাবিব ও তানভীর আহমেদ রবিন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, ইসহাক সরকার ও গোলাম মওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএস জিলানি, রাজিব আহসান, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, জাসাসের লিয়াকত আলী, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল অংশ নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুই বছর আগে বাড়ি ছাড়েন নিহত কেএনএফ সদস্য বেনেট
পরবর্তী নিবন্ধরাজস্থলী-সাইচল সীমান্ত সড়ক প্রকল্প পরিদর্শনে সেনাপ্রধান