কাঠগড়া থেকে পলায়নের পাঁচদিনেও মেলেনি আসামির হদিস

নেপথ্যে কোর্ট পুলিশের অবহেলা নেয়া হয়নি ব্যবস্থা

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের ১ম যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতের কাঠগড়া থেকে পলায়নের পাঁচদিন পরও এক আসামির হদিস মেলেনি। একই সাথে ঘটনার নেপথ্যে কোর্ট পুলিশের অবহেলার কথা বলা হলেও কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ নিয়ে আদালত পাড়ায় নানা কথা বলছে আদালত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, আদালত থেকে বলা হচ্ছে, পুলিশ দায়িত্বে না থাকায় সুযোগ বুঝে আসামি পালিয়েছেন। কিন্তু আদালত শুধু পলায়ন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অবহেলার জন্য পুলিশ বা অন্য কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি। এ বিষয়ে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন পারভেজ আজাদীকে বলেন, পুলিশের অবহেলাতেই সেদিন আসামি পালিয়েছেন। তাদের কেউ ঘটনার দিন দায়িত্বে ছিলেন না। তবে আদালত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থামূলক কোনো আদেশ দেননি। পলায়নকৃত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছিলেন। এখনো তিনি গ্রেপ্তার হননি।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হুমাউন কবির আজাদীকে বলেন, পলায়নকৃত ওই আসামির বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তা আমাদের কাছে আসে। আমরা তা সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়েছি। এখন সংশ্লিষ্ট থানা তাকে গ্রেপ্তার করবে। আমাদের অবহলোর কথা কেন বলা হচ্ছে বুঝতে পারছি না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আদালত তো আমাদের বিরুদ্ধে কোনো আদেশ দেননি। তাহলে আমাদের অবহেলার কথা কেন আসছে। আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না। আমাদের পক্ষ থেকে নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি ওই আসামির আইনজীবীর গাফিলতি ছিল। আদালত তো বারবার ডেকেছিলেন।
গত সোমবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য থাকায় ১ম যগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির ছিলেন চেক ডিজ অর্নার মামলার আসামি মো. আবুল হাশেম মাঝি (৬০)। একপর্যায়ে তার বিরুদ্ধে ১ বছরের সাজা ও সমপরিমাণ টাকা পরিশোধের রায় ঘোষণাও হয় এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয়। কিন্তু তিনি গায়েব। তাকে আদালত কক্ষে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কাঠগড়া থেকে পালিয়েছেন। একপর্যায়ে এটিকে কেন্দ্র করে আদালত পাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আদালতের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, জেলা পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার ফলে মো. আবুল হাশেম মাঝি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। মো. আবুল হাশেম মাঝি নোয়াখালী জেলা সদর উপজলোর মৃত নছির মিয়ার সন্তান।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মো. আবুল হাশেম মাঝির বিরুদ্ধে মামলাটি (চেক ডিজ অর্নার মামলা) করেন হাটহাজারীর ইউনুচ নগরের মো. কাশেমের পক্ষে তার ছেলে মো. সেকান্দার বাদশা। নেগোশিয়েবল ইনষ্ট্রমেন্ট এ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। আরজিতে টাকার পরিমাণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে ২২ লাখ টাকা। আদালতসূত্র আরও জানায়, বিবাদী মো. আবুল হাশেম মাঝির বিরুদ্ধে আদালত চলতি বছরের ৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করেন। ৬ সেপ্টেম্বর বাদী মো. সেকান্দার বাদশার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তখন পর্যন্ত মো. আবুল হাশেম পলাতক ছিলেন। পরে তিনি ৮ সেপ্টেম্বর আদালত কতৃক জামিন নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপতেঙ্গায় জাহাজ থেকে পড়ে চীনা নাগরিকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধবরেণ্য ক্রীড়া সংগঠক সাহেদ আজগর চৌধুরীর ইন্তেকাল