কাউন্সিলর প্রার্থী কাদেরসহ ১১ জন রিমান্ডে

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

নগরীর পাঠানটুলিতে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সংঘর্ষে আজগর আলী বাবুল (৪৮) নামে ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল কাদেরসহ এগারোজনের প্রত্যেকের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আদালতে রিমান্ড মঞ্জুর করার পরপরই দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গেছে ডিবি পুলিশ। অন্যদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বিকেলে মহানগর হাকিম মোহাম্মদ শফিউদ্দিনের আদালতে মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আসামিদের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেয়া হয়। নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) সাহাবুদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এর আগে আদালতে ডিবি পুলিশ আব্দুল কাদেরসহ এগারোজন আসামিকে দশদিন করে রিমান্ডে দেয়ার আবেদন করেছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের (পশ্চিম) পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন খান আজাদীকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল কাদেরসহ ছয়জন এজাহারনামীয় ও বাকী পাঁচজন সন্দিগ্ধ আসামি। জানা গেছে, রিমান্ডে নেয়া আসামিদের মধ্যে এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছে হেলাল উদ্দিন (৪০), ওবায়দুল কবির মিন্টু (৪০), ইমরান হোসেন ডলার (২৪), দিদার উল্লাহ দিদু (৪৮), আসাদুজ্জামান রায়হান (২৯)। সন্দেহভাজন আসামিরা হলেন, মিনহাজ হোসেন ফরহাদ (২০), শহীদুল আলম সাহেদ (৩৭), জাহিদুল আলম জাহিদ (২৫), শহিদুল ইসলাম (৩৩), আব্দুর রহমান (৪৪)।
ডিবি পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, রিমান্ড মঞ্জুরকৃত এগারো আসামির মধ্যে এজাহারনামীয় দিদার উল্লাহ দিদু ও সন্দেহভাজন আসামি আব্দুর রহমান বর্তমানে ডিবি হেফাজতে রয়েছে।
জানা গেছে, একইদিন আদালতে আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। এসময় আদালত আগামী সাতদিনের মধ্যে পুলিশ রিমান্ড কার্যকরের নির্দেশনা দিয়ে রিমান্ড প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে আসামিদের জামিন আবেদনের বিষয়ে শুনানি মুলতবি রেখেছেন।
গত মঙ্গলবার রাত আটটায় পাঠানটুলী মগপুকুর পশ্চিম পাড় এলাকায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাদেরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাহাদুর আজগর আলী নামে এক ব্যবসায়ী নিহত ও মাহাবুব নামে অপর একজন গুলিবিদ্ধ হয়। এরা দু’জনই নজরুল ইসলাম বাহাদুরের সমর্থক বলে দাবি করা হচ্ছে।
ওই ঘটনার পরপরই পাশ্ববর্তী একটি ভবনের ভেতর আশ্রয় নেয় আব্দুর কাদেরসহ তার লোকজন। পরে বিক্ষোভের মুখে পুলিশ সেই ভবনে অভিযান চালিয়ে আব্দুল কাদেরসহ ২৬ জনকে আটক করে। রাতে নিহত বাবুলের ছোটো ছেলে সিজাম মোহাম্মদ সেতু আব্দুল কাদেরসহ ১৩জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০জনকে আসামি করে ডবলমুরিং থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে সেই মামলায়
এগারোজনকে গ্রেপ্তার দেখায় ডিবি পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তা শাহাদাত জানান, আটক ২৬ জনের মধ্যে এগারো জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন, আব্দুল কাদের (৫০), হেলাল উদ্দিন হেলাল (৪০), ওবাইদুল কবির মিন্টু (৪৫), আব্দুল ওয়াদুদ রিপন (৪২), আব্দুর রহিম রাজু (৪৫), আসাদুজ্জামান রায়হান (৩৫), আলাউদ্দিন আলো পিচ্চি আলো(৩৫), ইমরান হোসেন ডলার (২৪), দিদার উল্ল্যাহ দিদু (৪৮), সালাউদ্দিন সরকার (৪৫), দেলোয়ার রশিদ (৪২), মো. আলমগীর (৪৫) ও আব্দুল নবী (৪৭)।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগ চালাচ্ছিল আজগর আলী। সন্ধ্যা ৭টায় মগ পুকুর পশ্চিম পাড়ে আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে এজাহারনামীয় দুই থেকে তেরো নম্বার আসামী ও অজ্ঞাতমানা ৩০/৪০জন অতর্কিতভাবে হামলা করে নির্বাচনী প্রচারণা কাজে বাধা সৃষ্টি করে। এ সময় আব্দুল কাদেরের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা এলোপাতাড়ি গুলি করার অভিযোগ করে মামলার বাদী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেরে গেলে আ. লীগও বিএনপির মতো কথা বলত : সিইসি
পরবর্তী নিবন্ধভারত তো লাভ ছাড়া ভ্যাকসিন বিক্রি করবে না : অর্থমন্ত্রী