কর কমালে ভোক্তারাই লাভবান হবে

মোহাম্মদ সরোয়ার আলম

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৬ মে, ২০২১ at ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ইস্পাতের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর কমানো উচিৎ বলে মনে করছেন এইচএম স্টিল লিমিটেড এবং গোল্ডেন ইস্পাত লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ সরোয়ার আলম। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ভাবনা সম্পর্কে তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর। পণ্য আমদানি করতে গেলেই অগ্রিম কর হিসেবে কোটি কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এটিরও একটি আর্থিক ব্যয় রয়েছে। অগ্রিম কর বছর শেষে সমন্বয় করা হলেও আর্থিক ব্যয়ের কারণে এটি উৎপাদন ব্যয়কে প্রভাবিত করে। আগে অগ্রিম কর ছিল না। গত কয়েক বছর থেকে আমদানি পর্যায়ে ৪ শতাংশ অগ্রিম কর সংযোজন করা হয়। যা এখনো বলবৎ রয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আমদানি পর্যায়ের অগ্রিম কর ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনা উচিত। অগ্রিম কর কমপক্ষে এক-দুই শতাংশে নামিয়ে আনা হলে এখাতের উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, আমদানি থেকে উৎপাদন পর্যায়ে সরকারি বিভিন্ন শুল্ক হিসেবে প্রতি টন রড উৎপাদনে সাড়ে তিন হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। আবার উৎপাদিত পণ্য বিক্রিতে দুই হাজার টাকা ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) দিতে হয়। সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট প্রতি টনে দুই হাজার টাকা কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনা উচিত। সবমিলিয়ে প্রতি টন লোহা ভোক্তা পর্যায়ে যেতে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। এই ব্যয় পরোক্ষভাবে ভোক্তারাই বহন করেন। ভ্যাট কমানো হলে ভোক্তারাই বেশি লাভবান হবে।
এ উদ্যোক্তা পরিচালক বলেন, রড তৈরির মূল উপকরণ আমদানিকৃত স্ক্র্যাপ। আবার রড তৈরির বেশিরভাগ কেমিক্যালও আমদানি হয়ে থাকে। এসব কাঁচামাল কন্টেনারে কিংবা বাল্কে বন্দর দিয়ে আমদানি করতে গেলে কয়েক ধরণের চার্জ বহন করতে হয়। অনেক সময় শিপিং এজেন্টরাও অযৌক্তিকভাবে কন্টেনার রিফেয়ার কিংবা কন্টেনার হ্যান্ডলিং হিসেবেও কিছু চার্জ নেয়। এতে রডের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে আলাদা পরিপত্রের মাধ্যমে বন্দর সংশ্লিষ্ট অযৌক্তিক চার্জগুলো রোধ করা গেলে পণ্যের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। এতে ভোক্তারা উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে বছরে মাথাপিছু গড় লোহার ব্যবহার ৩৮ কেজি। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে মাথাপিছু লোহার ব্যবহার ৬০-৭০ কেজি। বাংলাদেশে গত বছর ৭০ লাখ টন স্টিল উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত এসব লোহার ৬০ শতাংশ ব্যবহৃত হয়েছে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে, আর ৪০ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে ব্যক্তিগত ভোক্তা পর্যায়ে। তাই অগ্রিম কর ও ভ্যাট কমানো হলে শুধু ব্যক্তি পর্যায়ের ভোক্তারা লাভবান হবেন না, সরকারি প্রকল্পগুলোর ব্যয়ও কমে আসবে। বিশেষ করে বড় বড় মেগাপ্রকল্পের ব্যয় শত শত কোটি টাকা কমে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএমবিবিএস : চমেকে ভর্তি কার্যক্রম ২২ মে শুরু
পরবর্তী নিবন্ধঅক্সিজেন প্লান্টের জন্য সরকারি সহায়তা চাই