দেশে দিনে করোনাভাইরাসের রোগীর শনাক্তের হার ৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১৯ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ৩২৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা আজ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ফলে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ০৩। আগেরও দিন তা ছিল ৮ দশমিক ৬৫। বিডিনিউজ
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে মহামারী পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার আগে গত ২৯ মে ১ হাজার ৪৩ রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তারপর শনিবারই সবচেয়ে কম রোগী শনাক্তের খবর এল, যদিও নমুনা পরীক্ষাও তুলনামূলক কম ছিল।
সংক্রমণের হার কমলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে।
শনিবার ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে, যা আগের দিন ছিল ৩৮।
নতুন যে ৪৮ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে নারী বেশি। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ২২ জন, নারী ২৬ জন।
এনিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৮৮০ জন। আর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫ লাখ ২৮ হাজার ৫৪২।
গত একদিনে সেরে উঠেছেন ৩ হাজার ১৬৮ জন কোভিড রোগী। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলেন ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৩৫ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ।
গত বছরের শেষ দিকটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও করোনাভাইরাসের ডেল্টা সংক্রমণের বিস্তারে এ বছরের এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে।
এর মধ্যে জুলাই, অগাস্ট ভয়াবহ অবস্থা পার করে বাংলাদেশ।
২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট দুদিনই ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
ভয়াল অগাস্ট পেরিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছে সেপ্টেম্বরে, যে কারণে দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
দৈনিক শনাক্ত রোগী কমে আসায় এই পর্যন্ত সংক্রমণের হারও কমে আসছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯২ লাখ ২১ হাজার ৬৫৯টি নমুনা। তাতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
গত এক দিনে সারা দেশে মোট ১৮ হাজার ৮৬৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়, আগের দিন এই সংখ্যা ২৬ হাজারের উপরে ছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১ হাজার ৩২৭ রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার অর্ধেকের বেশি ঢাকা বিভাগের এবং অধিকাংশই ঢাকা জেলার।
ঢাকা জেলায় ৬২১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর বিভাগে শনাক্ত হয়েছে ৭৯০ জন।
নমুনা পরীক্ষার অর্ধেকের বেশি ১১ হাজারই হয়েছে ঢাকা বিভাগের, তার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি শুধু ঢাকা জেলায়।
এই বিভাগে ঢাকার পর শুধু গাজীপুরে অর্ধ শতাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই জেলায় সংখ্যাটি ৫৫।
বাকি জেলাগুলোতে নগন্য সংখ্যক নমুনা পরীক্ষার মধ্যে শনাক্ত আরও নগন্য।
এর মধ্যে শরীয়তপুরে ৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও মধ্যে সংক্রমণ ধরা না পড়লেও একজন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
সারাদেশে অর্ধ শতাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে মাত্র দুটি জেলায়, চট্টগ্রাম (৮২) ও কুষ্টিয়ায় (৫২)।
গত দিনে রোগী শনাক্তের সংখ্যা চট্টগ্রাম বিভাগে ২৫০, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩০, রাজশাহী বিভাগে ৫১, রংপুর বিভাগে ১৮, খুলনা বিভাগে ১০৪, বরিশাল বিভাগে ৩১, সিলেট বিভাগে ৫৩।
যে ৪৮ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ২২ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের, তার মধ্যে ৯ জন ঢাকা জেলার।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যারা মারা গেছেন, তাদের ৩০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ১৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের মধ্যে ৪৪ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।