কবি জিললুর রহমান কবিতার ভাবকেন্দ্রে পূর্ণকুম্ভ মৃদুল পুরুষ

রিজোয়ান মাহমুদ | বৃহস্পতিবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

আশির দশকের শেষের দিকে যে ক’জন কবি বাংলা কবিতাকে দেশ – মাটি – সংস্কৃতি ও মানুষের চেহারায় উদ্ভাসিত করতে চেষ্টা করেছেন, কবি জিললুর রহমান তাঁদের অন্যতম একজন। আমরা তাঁর কবিতায় বিশুদ্ধ আত্মার সংগীত শুনতে পাই, যখন তিনি উচ্চারণ করেন ; সব নদী গঙ্গা নয় শিবের সান্নিধ্য পাবে / আমারও সান্নিধ্যে এসে ধন্য ছিল হালদা কর্ণফুলী / নদীরা সংকীর্ণ হলে চর জাগে, দেবতারা দূরে সরে যায় / নদীর বালুর চরে মাছের পিপাসা মিছে মরে, হৃদয়ের শব্দ শোনাবে সে ধুকপুক ধুকপুক / সব নদী গঙ্গা নয় হৃদয়ে বন্যা বয়ে দেবে ”
এভাবেই তিনি কবিতায় অন্যমন্ত্র পাঠ করেন পাঠকের জন্যে। জিললুর রহমানের কবিতার ভাষা সমগ্র ঔপনিবেশিক আধিপত্যবাদী ভাষার আড়ালকে ছাপিয়ে পরিশ্রুত সারল্যযুক্ত বিষয়ানভূতির দিকে এগিয়েছে। তিনি খুব সুক্ষ্ম পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় কবিতার অনুষঙ্গ প্রভাবক এড়িয়ে সুস্নিগ্ধ বুদ্ধিদীপ্ত স্বতন্ত্র অন্য মন্ত্রের লীলাকর। কবিতা থেকে অনুভবে, উপমা থেকে প্রাঞ্জল রূপকে অদ্ভুত এক মেলবন্ধন রচিত হতে দেখা যায় জিললুর এর কবিতায়। তিনি অতিসমপ্রতি লিখেছেন ৭ মাত্রার অনবদ্য ধ্বনি ; একটি মেরাজের রাত্রে ঘুমিয়েছি এবং অসাধারণ দীর্ঘ কবিতা আত্মজার প্রতি। এ-সব কবিতার ভাবকেন্দ্রে তিনি অনুভূতি স্ফুরিত সর্বমানবের পূর্ণকুম্ভ মৃদুল পুরুষ। কবিতা আশ্রমে জিললুর বাংলা কবিতার ভিন্ন এক পুরোহিত । বারংবার তিনি বিষয়ানুক্রমিক কবিতাকে পরিবর্তন করতে চেয়েছেন এবং অনির্বচনীয় একটা বোধ সর্বপাঠকের জন্য চারিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপঞ্চান্নতেও যৌবন যার
পরবর্তী নিবন্ধমনের মতো আয়না