কবিতা আবৃত্তিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বাচিক শিল্পীদের শ্রদ্ধা

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২০ মার্চ, ২০২১ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত আবৃত্তি, কবিতাপাঠ ও বৃন্দ পরিবেশনা নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আবৃত্তি’র আয়োজন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সহযোগিতায় মুজিববর্ষ জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সাংস্কৃতিক উপ কমিটির ওয়ার্কিং কমিটি। গতকাল শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ির মুক্তমঞ্চে আবৃত্তির এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। মুজিব শতবর্ষে সকল জেলায় একযোগে জাতির পিতার প্রতি নিবেদন করে এই আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন কবির কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের বাচিক শিল্পীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আবৃত্তি শিল্পী তাসকিয়া-তুন নুর তানিয়ার সঞ্চালনায় ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহা-পরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আবৃত্তি শিল্পী দেবাসীষ রুদ্র।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, যে পরিমাণ অত্যাচার, নির্যাতন বঙ্গবন্ধু সহ্য করেছেন তার সমকালীন সময়ে অন্য যত রাজনীতিবিদ ছিলেন তারা ক্ষমতার অংশীদারত্ব ভোগ করেছেন। কেউ আইয়ুব খানের মন্ত্রী হয়েছেন, কেউ ইয়াহিয়া খানের মন্ত্রী হয়েছেন। আন্দোলন, সংগ্রাম, জেল খাটা আর নির্যাতনের শিকার হওয়া এদিকে কিন্তু কাউকে আমরা দেখতে পাই নাই। আমরা অবশ্য একদিকে ভাগ্যবান বাংলার মানুষ উনার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। অন্যান্য যত বড় বড় নেতা ছিল তাদের ডাকে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সাড়া দেয় নাই, একত্রিতও হয় নাই।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবদানকে আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। আমরা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের সামনে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস, রাজনৈতিক কর্মকান্ড তুলে ধরছি। তারা যেন বুঝতে পারে যে একটা সময় আমরা পরাধীন ছিলাম, নির্যাতিত ছিলাম এবং কীভাবে কার নেতৃত্বে এ দেশটা স্বাধীন হয়েছিল।
সভাপতির বক্তব্যে আবৃৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান বলেন, আমরা শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করবো না। আমরা যেন সত্যিকার অর্থে ভালোবাসার জায়গায় বঙ্গবন্ধুকে রাখতে পারি। আমরা যারা সংস্কৃতি চর্চা করি আমরা যেন আমাদের কাজের ভেতর দিয়ে শেষ পর্যন্ত মানুষের কথা, মাটির কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা উচ্চারণ করতে পারি। আমরা আমাদের কণ্ঠে কবিতাকে ধারণ করার মধ্য দিয়ে মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত থাকবো।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবৃত্তি শিল্পী দেবাশীষ রুদ্র বলেন, আবৃত্তি শুধু শিল্প নয়, আবৃত্তি চেতনার ভাষা। একটি কথা না বললেই নয়, জাতির পিতার আদর্শ কেবল ব্যক্তি জীবনে নয়; সমাজে প্রয়োগ করতে হবে। জাতির পিতাকে স্মরণ করার যে চর্চা শুরু হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয় আর মুক্তিযুদ্ধ মানেই বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। আমাদের পথচলা থামবেনা কখনো।
এদিকে, অনুষ্ঠানে দলীয় আবৃত্তি পরিবেশনা করে প্রাবৃত্তি সংগঠন, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, চট্টগ্রাম আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, ত্রিতরঙ্গ আবৃত্তি দল এবং সুচয়ন ললিতকলা কেন্দ্র। এছাড়াও একক আবৃত্তি করেন বিভাস আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের আবৃত্তি শিল্পী শামীমা শীলা, শব্দনোঙর আবৃত্তি সংগঠনের দিলরুবা খানম, স্বদেশ আবৃত্তি সংগঠনের সেলিম ভূঁইয়া, কণ্ঠনীড় আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের দীপান্বিতা চৌধুরী, নির্মাণ আবৃত্তি অঙ্গনের সমুদ্র টিটু, স্পৃহা আবৃত্তি নীড়ের ফাইরুজ নাওয়াল দুর্দানা, মুক্তধ্বনি আবৃত্তি সংসদের ইশরাত জাহান, দর্পন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংঘের মাহমুদা তাসনিম, উত্তরায়ণ (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) সংগঠনের অনিক মহাজন, নরেণ আবৃত্তি একাডেমির গোলাম রসুল আশিক এবং ঐকতান সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর লিটন কান্তি সরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুয়ার টাকা না পেয়ে স্ত্রী ও ভাবীকে কোপাল যুবক
পরবর্তী নিবন্ধপুকুরিয়ায় চাচাতো ভাইয়ের হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা নিহত