কক্সবাজারে গণধর্ষণ মামলায় আরো তিন আসামি গ্রেফতার

গ্রেফতার করা যায়নি মূল আসামি আশিককে

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৯:৪৩ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারে বেড়াতে আসা এক নারীকে অপহরণের পর হোটেলে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আরো তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা গত দুইদিন ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব আসামিকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ধর্ষণ মামলায় তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো রেজাউল করিম, মামুনুর রশীদ ও মেহেদী হাসান। তারা ধর্ষণের ঘটনায় সহযোগী ছিল বলে দাবি পুলিশের।

এ গ্রেফতারের বিষয়ে আজ রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিম এক সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, “ধর্ষণের মামলায় ট্যুরিস্ট পুলিশ গত দুই দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে আটক করে। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত প্রতীয়মান হওয়ায় ধর্ষণ মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।”

অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, “ধর্ষণকান্ডের মূল অভিযুক্ত আশিককে এখনও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। তাকে শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।”

পর্যটক দাবিদার এক নারী দাবি করেছেন, বুধবার রাতে শহরের সন্ত্রাসী আশিক তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে র‌্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) অভিযান চালিয়ে কক্সবাজারের হোটেল জিয়া গেস্ট ইন থেকে তাকে উদ্ধার করে।

এই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ওই নারীর স্বামী মামুন মিয়া বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো ৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মোট সাতজনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। এ চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের মামলাটি তদন্ত করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

আলোচিত এ মামলার আসামিরা হলো আশিকুর রহমান, তার তিন সহযোগী ইস্রাফিল হুদা ওরফে জয়, মেহেদী হাসান ওরফে বাবু এবং রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।

এই মামলায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে ঘটনার রাতেই (বুধবার দিবাগত রাত) জিয়া গেস্ট ইনের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল শনিবার আদালতে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর সন্ধ্যায় তাকে জেলা কারাগার থেকে ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে তদন্ত কর্মকর্তারা আজ রবিবার দ্বিতীয় দিনের মতো তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিম।

মামলার আসামিদের মধ্যে আশিকের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, মাদক, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন আইনে ১৭টি এবং জয়ের নামে ২টি মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

এদিকে, কক্সবাজারে নারী পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাদের জন্য ১০০ বা ১৫০ ফুটের একটা সংরক্ষিত এলাকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান।

তিনি বলেছেন, “কক্সবাজারে আসা নারী পর্যটক বা পর্দানশীন নারীদের জন্য ১০০ বা ১৫০ ফুটের একটা সংরক্ষিত এলাকা করছি। যেটি খুব শীঘ্রই চালু করা হবে। আগ্রহীরা স্বেচ্ছায় গিয়ে সেখানে পানিতে নামতে পারবেন। এছাড়া সৈকতে তাদের জন্য আলাদা ড্রেসিং রুম ও লকার রুমের ব্যবস্থাও করছি।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে শতবর্ষী পুকুরের ভরাটকৃত মা‌টি ২৪ ঘণ্টার ম‌ধ্যে সরা‌নোর নি‌র্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে ধর্ষণের প্রধান আসামি আশিকুল গ্রেপ্তার