একুশের সেই অবিনাশী গান যেভাবে এল

| শুক্রবার , ২০ মে, ২০২২ at ৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ

মায়ের ভাষার দাবিতে ফুঁসে ওঠা বাঙালির মিছিলে পুলিশ গুলি ছুড়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে; সেই আন্দোলনের সংগ্রামী রফিকের নিথর দেহ হাসপাতালে দেখে কলেজ ছাত্র আবদুল গাফফার চৌধুরীর হৃদয়ে জাগে ভাই হারানোর বেদনা। তিনি লেখেন এক অমর কবিতা: আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি। প্রথমে আব্দুল লতিফ ও পরে আলতাফ মাহমুদের সুরে সেই কবিতা হয় গান। খবর বিডিনিউজের।
বাংলা ভাষা, ভাষা আন্দোলন আর বাঙালির ইতিহাসে অমর হয়ে যাওয়া সেই গান সৃষ্টির গল্প এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন সাংবাদিক, কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল পূর্ববাংলা ব্যবস্থাপক পরিষদের বাজেট অধিবেশন। সেদিন ডাকা হয় ধর্মঘট। ধর্মঘট প্রতিহত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সেদিন ১৪৪ ধারা ভেঙে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায় বাংলা মায়ের দামাল সন্তারেরা। পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্দেশে মিছিলের ওপর পুলিশের গুলি চলে; শহীদ হন রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত, শফিউদ্দীন, সালামসহ আরও অনেকে।
ঢাকা মেডিকেলে আহত ছাত্রদের দেখতে গিয়েছিলেন তখনকার ঢাকা কলেজের ছাত্র আবদুল গাফফার চৌধুরী। মেডিকেলের বহির্বিভাগে তিনি ভাষা সংগ্রামী রফিকের মাথার খুলি উড়ে যাওয়া লাশ দেখতে পান। লাশটি দেখে তার বারবার মনে হতে থাকে, এটা যেন তার নিজের ভাইয়েরই রক্তমাখা লাশ। তখনই তার মাথায় আসে একটি লাইন, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি।’
এরপর ইতিহাস হয়ে যায় সেই কবিতা। যাতে সুর করেন আলতাফ মাহমুদ। হয়ে ওঠে বাঙালির ভাষার গান, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেছিলেন, রফিকের নিথর দেহ পড়ে আছে। মাথার খুলি নেই। মনে হচ্ছে যেন আমার ভাই পড়ে আছে। তখন হঠাৎ করেই ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ এই লাইন মুখে চলে আসে। গানটি লিখতে আমার কোনো কৃতিত্ব নেই। গানটা এমন সময় লিখেছিলাম নিজের অজান্তেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসকালে তাইজুল ঝলক, বিকালে বিবর্ণ ড্র
পরবর্তী নিবন্ধআবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই