একুশের চেতনা ও আমাদের করণীয়

সুলতানা কাজী | শনিবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ

ভাষার মাস, আশার মাস, জাগরণের মাস ফেব্রুয়ারি। “অ, আ, ক, খ “কে মনের গহিনে স্থায়ী আসন দেওয়ার অপরূপ নাম একুশ। ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে আমাদের নতুন করে জানার হয়তো প্রয়োজন নেই! উনিশশো বায়ান্নের একুশ, আমাদের চেতনার অগ্নিমশাল। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যেমন আমরা আমাদের প্রতিচ্ছবি দেখি, তেমনি বাংলাদেশ বললে পৃথিবীবাসীর মানসপটে সুমিষ্ঠ বাংলা ভাষায়’ই ভেসে ওঠে নিঃসন্দেহে। পৃথিবীর মানচিত্রের ইতিহাসে মাতৃভাষার অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মদানের কথা একমাত্র বাঙালিরই আছে! একটা প্রতিবাদ, অতঃপর রক্তে ভেজা রাজপথ! একুশ আমাদের অহংকার। একুশ আমাদের হৃদপিণ্ড। আশ্চর্যজনকভাবে সত্যি যে, একুশ এখন শোকের নয় আর, একুশ এখন প্রতিজ্ঞা গ্রহণ, সামনে পথচলা এবং অবশ্যই প্রেরণার। শোকে মুহ্যমান জাতি আজ, বাধা অতিক্রম করে সামনে এগোনো শিখে গেছে! একুশ মানে চেতনার প্রতীক। সেই চেতনার ধারাবাহিকতায় আমাদের করণীয় হলো… পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনে, সর্বত্র বাংলা ভাষার সঠিক প্রয়োগ এবং প্রীতিবোধ বজায় রাখা। কথায় কথায় হিন্দি, ইংরেজি, কোরিয়ান ইত্যাদি ইত্যাদি ভাষার মিশেলে জগাখিচুড়ি ভাষা পরিত্যাগ করতে হবে। রক্তের বিনিময়ে পাওয়া ভাষা- বাংলা। নির্ভুল বাংলা বলাকেই ফ্যাশন মনে করা উচিত আমাদের। আমরা জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পুরো পৃথিবীর মানুষ সোৎসাহে একুশে ফেব্রুয়ারিকে পালন করছেও। এ আমাদের জাতিগত অহংকার। মজার বিষয় হলো, অন্যান্য ভাষায় কথা বলা আবশ্যিক কিন্তু বাংলা ভাষায় কথা বলা এবং লেখা অপরিহার্য। এ ভাষার যত্ন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্বও। বাংলা ভাষায় যখন কথা বলবো এবং লিখবো, আমাদের উচিত, ধার করা অপ্রয়োজনীয় শব্দ না ঢুকানো! পৃথিবীর সবচেয়ে সুমিষ্ট ভাষার অধিকারী এ বাংলাকে হৃদয়ে স্থান দেওয়া এবং এর সঠিক মর্যাদা দেওয়া আমাদের গুরুদায়িত্ব। প্রাণের ভাষা, গর্বের ভাষা, রসের ভাষা বাংলাকে, না জানি কখন আমাদের গাফেলতির জন্য হারাতে হয়! সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর এবং এখন থেকেই শুরু।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাতৃভাষার সর্বাধিক গুরুত্ব নিশ্চিত হোক
পরবর্তী নিবন্ধউপলব্ধি আমার রাজনৈতিক পথচলা জীবন থেকে