একযোগে জাপার ৬৬৮ জনের পদত্যাগের ঘোষণা

| শুক্রবার , ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে দলটির ছয় শতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন ভাইস চেয়ারম্যানসহ ঢাকার আটটি থানার ৬৬৮ জন নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে কিছুদিন আগে দল থেকে অব্যাহতি পাওয়া একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং দুইজন ভাইস চেয়ারম্যানও রয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।

পদত্যাগের বিষয়ে জানাতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান বলেন, পার্টিতে বর্তমানে যিনি চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত আছেনসেই জিএম কাদের এক বছর আগে থেকেই বলে আসছেন, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে। সেভাবে তিনি বক্তৃতাবিবৃতি দিয়ে এসেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে গরম গরম কথা বলে নেতা হিসেবে জাহির করার চেষ্টাও করেছেন। আমরাও তার প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের আগে আমরা বুঝতে পারলাম, তিনি গোপনে সরকারে সাথে আঁতাত করে নিজের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ৩০০ আসন থেকে প্রার্থী মনোনীত করার পর মাত্র ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাবার বিনিময়ে গোটা পার্টিকেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এমতাবস্থায় জাতীয় পার্টির নিবেদিতপ্রাণ নেতা, কর্মী, সমর্থকরা চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। পার্টির তৃণমূল পর্যায় থেকে পার্টিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবার জন্য চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের পদত্যাগের দাবি ওঠে। আমরা এরশাদ প্রেমিক নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন তার বিপর্যস্ত সংগঠনে অবস্থান করে এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ধ্বংস দেখতে চাই না। তাই আমরা জি এম কাদেরের সংগঠন থেকে আজ গণপদত্যাগের ঘোষণা করছি এবং এই গণপদত্যাগ অব্যাহত থাকবে। এ সময় মোহাম্মদপুর, আদাবর, পল্লবী, হাতিরঝিল, মিরপুর, দারুসসালাম, শেরেবাংলা, বাড্ডা, রূপনগর থানার সভাপতিসাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের ৬৬৮ নেতাকর্মীর তরফে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সম্প্রতি অব্যাহতিপ্রাপ্ত দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টুর অভিযোগ, জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে মুদির দোকান মনে করেন। সারাদিন বনানীর দোকানে বসেন। আর তার সিন্ডিকেট দিনভর দোকানদারি করে সন্ধ্যার সময় জিএম কাদেরকে লেনদেনের হিসাব দেন। সারাদেশের সাথে জিএম কাদেরের কোনো যোগাযোগ নেই। পার্টিকে তিনি ধ্বংস করে ফেলেছেন। আমরা দলের এই বিপর্যয়ের জন্য জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ দাবি করছি। আমরা পল্লীবন্ধু এরশাদের আদর্শ নিয়ে এগোব। কোনো বাধা সৃষ্টি করবেন না। দলটা আপনার না।

জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে কেউ কেউ এই অভিযোগ (স্বেচ্ছাচারিতা) অনেক দিন ধরেই দিয়ে আসছে। বাস্তবে জাতীয় পার্টিতে কোনো ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা নেই। তাহলে এত নেতাকর্মীর পদত্যাগের ঘোষণা কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের দলে নেতাকর্মীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এখন জাতীয় পার্টিতে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া ভিড়। তাই তারা চলে গেছে, তারা চলে যাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপির ‘কালো পতাকা মিছিল’ আজ ও কাল
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে করণীয় ঠিক করা হবে