একটি সেতুর অভাবে ১৬ গ্রামে দুর্ভোগ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ২৩ জুলাই, ২০২২ at ৫:০২ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার গোমতি বাজার। কিছুদূর পার হলেই ঘিলাছড়া। আর সোজা উত্তর দিকে গেলেই দেখা মিলবে গোমতিছড়া। এই দুই ছড়ার মাঝামাঝি স্থানে নেই কোনো সেতু। ফলে দুর্ভোগে দিন পার করছেন গোমতির ১৬ গ্রামের হাজারো পরিবার।
স্থানীয় সুখী রঞ্জন ত্রিপুরা বলেন, জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়ে ভোট নেয়। কিন্তু নির্বাচিত হলে তাদের আর দেখা মিলে না। গত কয়েক যুগ ধরে আমরা আধাপাকা ও কাঁচা দীর্ঘ পথ ভোগান্তিতে পার হচ্ছি। এছাড়া গোমতিছড়ার উপর নির্মিত হয়নি সেতু। ফলে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ সড়কের ঘিলাছড়া ও গোমতিছড়ার উপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় পায়ে হেঁটে ছড়া পার হচ্ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষক এবং এলাকার বাসিন্দারা। আদা, হলুদ, কলাসহ তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পোহাতে হচ্ছে নানা সমস্যা। ক্ষোভ প্রকাশ করে গোকুলমনি পাড়ার পরিমোহন ত্রিপুরা বলেন, সকালে সূর্য ওঠার আগে রওনা দিলেও পায়ে হেঁটে গোমতি বাজারে পৌঁছতে দুপুর হয়ে যায়। একইভাবে নিজেদের অব্যাহত কষ্টের কথা জানালেন কার্বারী পাড়ার বাসিন্দা হিরনময় ত্রিপুরা।
গোমতি বি. কে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল হুদা বলেন, বেয়াদতপাড়া, প্রার্থনা কারবারী পাড়া, নতুন পাড়া, কেশব মহাজন পাড়া, গোকুলমনি পাড়া, খাদা পাড়া, ভাঙামুড়া, কাপতলা পাড়াসহ ১৬টি পাড়া থেকে প্রায় দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিনই দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিতে ছড়ার পানি বেড়ে যায়। ফলে এ সময় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারে না।
গোমতির ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলন ত্রিপুরা বলেন, কেউ অসুস্থ হলে কোনভাবেই দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পেরিয়ে চিকিৎসা নেয়া সম্ভব হয় না। ফলে অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে ঘিলাছড়া ও গোমতিছড়ার ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে গোমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন, সেতুর অভাবে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি এ জনপদে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের অব্যাহত চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন সাধারণ জনগণ। সেতুটি নির্মাণ করা হলে গোমতির সাথে দুর্গম ১৬ পাহাড়ি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। মানুষের নিত্যদিনের দুর্ভোগ কমে আসবে।
সেতু না থাকায় পিছিয়ে পড়া পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ নাগরিক সুবিধা হতে বঞ্চিত জানিয়ে মাটিরাঙা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করে ঘিলাছড়া ও গোমতিছড়ার উপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আজ
পরবর্তী নিবন্ধবেশি দামে কালোবাজারে রেলের টিকিট বিক্রি যুবক আটক