উত্তাপ নেই গরম কাপড়ের ব্যবসায়

উষ্ণ আবহাওয়ার জের

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২১ জানুয়ারি, ২০২২ at ১১:২১ অপরাহ্ণ

প্রবাদ আছে -‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’। তবে এখন মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহ শেষ হতে চললেও প্রকৃতিতে শীতের সেই আমেজ অনুভূত হচ্ছে না। তাই মাঘ মাস মানে এক সময় কনকনে শীতের যে পরিবেশ দেখা যেত, সেটিও বর্তমানে উধাও হতে বসেছে। মাঘের সেই কনকনে শীত থেকে রক্ষা পেতে মানুষ ছুটে যেত গরম কাপড়ের দোকানে। এখন শীতের আমেজ কম থাকায় গরম কাপড়ের ব্যবসায় যেন উত্তাপ নেই। জেঁকে বসেছে ঠাণ্ডাভাব। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের কাপড়ের ব্যবসা প্রধানত মৌসুমকেন্দ্রীক। আমাদের দেশে শীতের কাপড় বেচাবিক্রি হয় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। ইতোমধ্যে মৌসুমের বেশিরভাগ সময় চলে গেছে। তাই এখনো আবহাওয়া উষ্ণ থাকায় ব্যবসায়ীরাও আর্থিকভাবে প্রচুর লোকসান দিচ্ছেন। গত বছর করোনার কারণে লকডাউনে লকডাউনে ব্যবসায়ীদের দিন গেছে। এখন একদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে অপরদিকে শীতের আমেজ নাই।
গতকাল নগরীর নিউমার্কেট বিপণী বিতান, টেরিবাজার, জহুর হকার্স মার্কেট, তামাকুমন্ডি লেন ও রিয়াজুদ্দিন বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দোকান ও শো-রুমের কর্মচারীরা ক্রেতার অপেক্ষায় অনেকটা অলস সময় পার করছেন। শীতের মৌসুমকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতিও নিয়েছেন। জহুর হকার্স মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বরাবরের মতোই ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন ফ্যাশন ও ডিজাইনের শীতের কাপড় নিয়ে এসেছেন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বেচাকেনা হলেও এখন খুব মন্দাভাব চলছে। ক্রেতাদের জন্য ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দামের পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে-ব্লেজার, কম্বল, সুয়েটার, জ্যাকেট এবং রকমারি শাল। মার্কেটে চীনা তৈরি ব্লেজার বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায়। এছাড়া চামড়ার তৈরি জ্যাকেট ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে চীনা কম্বল আকারভেদে এক হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশিয় শাল ও চাদর বিক্রি করছেন ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। বিদেশি ভালো মানের শাল চাদরের দাম পড়ছে ৫০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। ভালো মানের সুয়েটার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকায় এবং উলের তৈরি সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ১ হাজার টাকায়।
মার্কেটে শীতের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে জহুর হকার্স মাকেট ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলুল আমিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, শীতের কাপড়ের ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। এরমধ্যে আবার করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রণের সংক্রমণ বাড়ছে। মার্কেটে ক্রেতাদের আনাগোনাও তাই কমে গেছে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এখন নিজেদের মধ্যে খোশগল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। এভাবে আর দুই সপ্তাহ চলতে থাকলে গত বছরের মতো এবারও শীতের বাজার হারাতে হবে ব্যবসায়ীদের।
তামাকুমন্ডি লেন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক
আহমদ কবির দুলাল বলেন, এ বছর ব্যবসায়ীরা অনেক আশা নিয়ে শীতের কাপড় আমদানি করেছেন। কিন্তু বেচাবিক্রির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। আগামী এক মাস পরে শীতের অবিক্রিত কাপড় সব স্টক হয়ে যাবে। এতে ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ টাকা আটকে যাবে। গত বছরও ব্যবসায়ীরা শীতের বাজার হারিয়েছেন। আমরা মনে করেছিলাম, এই বছর পরিস্থিতি ভালো থাকবে। কিন্তু উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে মার্কেটে শীতের কাপড় কিনতে আসছেন না ক্রেতারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩০ কিমি যানজট
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনা হলে প্রধানমন্ত্রীর ম্যুরাল উন্মোচন