ইমরানের সরকার কি পতনের অপেক্ষায়?

ইস্তফার জল্পনা উস্কে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ জোট ছেড়ে বিরোধী শিবিরে প্রধান সঙ্গী দল

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ৩১ মার্চ, ২০২২ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে পাক সংসদে ভোটাভুটির আগে বড় ধাক্কা খেলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ভোটের আগে ইমরানকে ছেড়ে গেলেন তার দলের প্রধান জোটসঙ্গীও। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের প্রধান জোটসঙ্গী ছিল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম)। কিন্তু মাঝপথেই ইমরানের হাত ছেড়ে বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে চুক্তি করল এমকিউএম।
পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি একটি টুইট বার্তায় জানান, ইতিমধ্যেই ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোট এবং এমকিউএম নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করেছে। রাবতা কমিটি এমকিউএম এবং পিপিপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোটের মধ্যে চুক্তি অনুমোদন করবে। আমরা বুধবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানাব। পাকিস্তানকে অভিনন্দন। এমকিউএম বিরোধী দলের সঙ্গে হাত মেলানোর পর ঐক্যবদ্ধ বিরোধীদলের পক্ষে সংসদ সদস্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৭। ইমরানের সমর্থনে আছেন ১৬৪ জন সদস্য। অনাস্থা ভোটে ইমরানকে হারাতে ১৭২ জন সদস্যের ভোটের প্রয়োজন বিরোধীদের। অর্থাৎ, সংখ্যার এই সমীকরণ জারি থাকলে ইমরানের সরকার গদিচ্যুত হবে। পাকিস্তানের ক্ষমতায় কে থাকবে তা নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে শেষ মুহূর্তে নাটকীয় কোনো পট পরিবর্তন না হলে ইমরানের সরকারের অনাস্থা ভোটে পরাজয় প্রায় নিশ্চিত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরাও।
সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ : অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির আগে প্রধান জোটসঙ্গীও সঙ্গত্যাগ করায় গদি বাঁচানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে ইমরান খানের পক্ষে। আগামী রোববার পাক পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে ভোটাভুটির কথা। কিন্তু তার আগেই একের পর এক সহযোগী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের উপর থেকে প্রকাশ্যে সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা করছে। এই পরিস্থিতিতে ভোটাভুটির আগেই তিনি ইস্তফা দিতে পারেন বলে জল্পনা ক্রমশ বাড়ছে। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার বিকেলে ইমরানের সঙ্গে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার বৈঠকের পরে সেই জল্পনা আরও দৃঢ় হয়েছে। ইমরান বুধবার সহযোগী এবং দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করতে পারেন বলে পাক সংবাদমাধ্যমের একটি সূত্রের দাবি। যদিও ইমরানের দফতর থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
৩৪২ আসনের পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জাদু সংখ্যা ১৭২। ইমরানের নিজের দল পিটিআই-এর সদস্য ১৫৫ জন। কিন্তু পিটিআই-এর বেশ কয়েক জন পার্লামেন্ট সদস্য ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে ইমরানের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া বুধবার ইমরান সরকারের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া এমকিউএমপি এর ৭ এবং বিএপির ৫ সদস্য রয়েছেন। গত রোববার সমর্থন প্রত্যাহারকারী জামহুরি ওয়াতন পার্টির রয়েছেন এক সদস্য। এই পরিস্থিতিতে গদি বাঁচাতে মরিয়া ইমরান সোমবার তার দলের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়েছেন। ওই পদটি আর এক বিক্ষুব্ধ সহযোগী পিএমএলকিউকে দেওয়ার জন্যই এমন পদক্ষেপ। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এর সদস্য সংখ্যা ৫।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহলুদ দলের ৪, বিদ্রোহী ৩, বিএনপি ১
পরবর্তী নিবন্ধআমেনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তার স্বামী