ইচ্ছে উড়া মক্তবের পাঠগেলা ভোরেরা

বইমেলার বই

নূরুল হক | শুক্রবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

আধুনিকতার অবক্ষয়ী খণ্ডত্ববাদ বিরোধী স্বদেশের মাটি ঘনিষ্টতায় মুখর কবি। সর্বত্র ঘিরে থাকা অলঙ্ঘ অস্বস্তি ঘুচিয়ে স্বস্তিতে অবগাহন করতে কবি যেন উদগ্রীব।

ঢোক গেলো স্বস্তির

শ্রেণীভেদ আলতো ঢুলুঢুলু চোখ চেপে

জ্যোতিষ মিরর ভোজন পুঙ্খানু প্রস্তুতি।

পুরনো পৃথিবী দেখাতো হল

খসড়া খাতায়

উল্টে পাল্টে ভ্রু নামিয়ে

প্রতি পাতায় পাতায়

আদিম গুহায় যেরকম রাত্রিরা হয়

ঘন

তুমিও গিলে গিলে খাও

কষ্ট কাস্টুডি ও ক্ষতির রক্তনহর

যত অফুরন্ত টেক অফ সন্ধে

(মক্তবের পাঠগেলা ভোরেরা ৫৬)

একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত ‘মক্তবের পাঠগেলা ভোরেরা’ কবিতা গ্রন্থটি আধুনিক চিন্তাচেতনা ও দর্শনের প্রতিধ্বনি। প্রতিটি কবিতায় নিজস্ব ও স্বতন্ত্রবৈশিষ্ট্য ধরা দেয় পাঠক হৃদয়েমর্মে। ঔপনিবেশিক কলোনিজম কবির বিচরণ ক্ষেত্রে একেবারে বিপরীতে। প্রাত্যহিক যাপনে নিজস্ব রচনা রীতিই তার কাব্যশক্তির বিশেষত্ব বলা যায়।

ভীষণ মন্দ মানুষেরা পাকায় যাতনা

গ্রহস্বত্ব ছিটকে পড়লোনা

চলরে এবার ফিরি বাড়ি

নদী ভাঙার দুঃখ এখন বান্ধবীদের শাড়ি।

উড়তে থাকে পড়ছে খসে এ মন

আমার মধ্যে লুকিয়ে রাখা নিত্য অপহরণ

ভিনগ্রহে কে বসিয়ে দিলো হাওয়া অফিস

এই গ্রহটা পড়ে গেলে সাথে কিন্তু থাকিস।

(সন্তর্পণে ১৮)

আশির দশকের নিভৃত স্বভাবের কবি আবু তাহের মুহাম্মদের কবিতা আবহমান শেকড়ের নির্যাসযা মাঝে মাঝে আমূল নাড়িয়ে দেয় পাঠকের মর্মমূলকেও। গত প্রায় সাড়ে পাঁচ দশক ধরে আবু তাহের মুহাম্মদ নিরবিচ্ছিন্নভাবে কবিতা লিখে যাচ্ছেন। আঙ্গিক ও নিজস্ব দ্যোতনায় সমকালীন কাব্যসৌধের অন্যতম নির্মাতা হিসেবে তিনি স্থায়ী আসন করে নেবেন এমনটা ভাবা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবি ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের যুগপূর্তি অনুষ্ঠান
পরবর্তী নিবন্ধসাপ-খোপের সংসার