অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত যে করোনা টিকা ভারতে তৈরি হচ্ছে সেটির নাম হচ্ছে কোভিশিল্ড।
ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট অভ ইন্ডিয়ার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডকে অনুমোদন দেয়নি ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি (ইএমএ)। ফলে কোভিশিল্ড গ্রহণকারীদের ইউরোপ সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। বিডিনিউজ
অক্সফোর্ডের এই টিকা ইউরোপে ওয়াইড পাস বা ডিজিটাল গ্রিন সার্টিফিকেট পাওয়ার যোগ্য যা কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে।
কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ইএমএ সবুজ সংকেত পেলেও আটকে গেছে এই টিকার ভারতীয় সংস্করণটি।
ভারতে এখন ব্যাপক হারে দেওয়া হচ্ছে সেরামের তৈরি কোভিশিল্ড টিকা।
ইউরোপে গ্রিন পাসের জন্য অনুমোদন পেতে আবেদন করা হয়েছে কি না সেই ব্যাপারে সেরামের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ইএমএ জানিয়েছে, তারা ভারতের কোভিশিল্ড অনুমোদন দেয়নি।
অবশ্য সেরামের প্রধান নিরবাহী আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠানটি দ্রুতই বিষয়টির সুরাহা করার চেষ্টা করছে।
সোমবার (২৮ জুন) এক টুইটে তিনি লিখেছেন, “ভারতের কোভিশিল্ড নিয়েছেন এমন অনেক ভারতীয় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলো সফরের ক্ষেত্রে জটিলতার মুখে পড়েছেন। আমি সবাইকে নিশ্চিত করছি, বিষয়টি শীর্ষ পর্যায়ে জানিয়েছি। আশা করি, নিয়ন্ত্রক সংস্থা কূটনৈতিক পর্যায়ে বিষয়টির সুরাহা করবে শিগগিরই।”
বাংলাদেশেও দেয়া হয়েছে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ড।
ভারতের নিজস্ব উদ্ভাবিত টিকা কোভ্যাক্সিনও ইএমএ’র অনুমোদনের জন্য আবেদন করেনি। অবশ্য এই টিকা এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও অনুমোদন পায়নি।
৩২ কোটির বেশি ভারতীয়কে এই টিকা দু’টি দেয়া হয়েছে। ফলে ইউরোপে ট্রাভেল পাসের অনুমোদন না পাওয়ায় বেশ বিপাকে পড়ে গেছে দেশটি।
ভারতে অনুমোদন পাওয়া রাশিয়ার স্পুৎসিক-ভি টিকা অনুমোদনের বিষয়টি এই মুহূর্তে ইএমএ’র পর্যালোচনায় রয়েছে কিন্তু এই টিকার সরবরাহ পেতে দেরি হওয়ায় তার প্রয়োগ শুরু করা যায়নি সেখানে।
সম্প্রতি জি-৭ বৈঠকে আমন্ত্রিত হিসেবে অংশ নেওয়া ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এই ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্টের’ বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান জানান।
যুক্তরাজ্যের ইকুয়ালিটি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস কমিশনও এই ব্যবস্থার বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, কোভিড সনদের কারণে সমাজের একটি অংশ বৈষম্যের শিকার হতে পারে। এর ফলে সমাজে দু’টি শ্রেণি তৈরি হবে যার মধ্যে একটি শ্রেণি পুরো সুবিধা ভোগ করবে।
ভারতে ডেল্টা প্লাসসহ করোনাভাইরাসের নতুন কিছু ধরন দেখা দেওয়ায় এরই মধ্যে দেশটির ওপর হয় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নয়ত নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা আরোপ করেছে অনেক দেশ। এই তালিকায় রয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত প্রায় সব দেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড।
কানাডাও ভারতীয় ভ্রমণকারীদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার সময় বাড়িয়েছে ২১ জুলাই পর্যন্ত। একই ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে অস্ট্রেলিয়াও।