রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এবার ইউক্রেনের পতাকার হলুদ ও নীল রঙের স্পেস স্যুট পরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) নেমেছেন তিন রুশ নভোচারী। গতকাল শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর ওই তিনজনই প্রথম কোনো রুশ নভোচারী যারা মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছেন। মহাকাশে স্টেশনে তিন রুশ
নভোচারীকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানিয়েছেন আগেই সেখানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও জার্মানির সহকর্মীরা। রাশিয়া, আমেরিকা, কানাডা, জাপান এবং ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ মিলে এই আইএসএস প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে টানাপোড়েন থাকার পরও এই দুই দেশের অংশীদারিত্বে দুই দশক ধরে চালু রয়েছে আইএসএস প্রকল্পটি। খবর বিডিনিউজের।
বিবিসি জানায়, কাজাখস্তান থেকে উড্ডয়ন করে মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছান রুশ তিন নভোচারী হলেন, ডেনিস মাতভেইভ, ওলেগ আরটেমইভ এবং সারগেই করসাকভ। তাদের পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরে পৃথিবীতে রাশিয়ার মহাকাশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, সফল অবতরণের জন্য অভিনন্দন।
এর কয়েকঘণ্টা পর মহাকাশযানের দরজা খুলে গেলে হাসি মুখে ভাসতে ভাসতে এক এক করে বেরিয়ে আসেন ওই তিন নভোচারী; সেসময় তাদের গায়ে ছিল উজ্জ্বল হলুদ রঙের পোশাক; তাতে নীল রঙের পাড় বসানো। এমনিতে রাশিয়ার নভোচারীদের স্পেস স্যুট পুরোপুরি নীল রঙের; এর আগেও মহাকাশ যাত্রায় নভোচারীদের নীল পোশাক পরতে দেখা গেছে।
তিন রুশ নভোচারীর স্পেস স্টেশনে অবতরণ একই সঙ্গে সরাসরি সম্প্রচার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা এবং রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমস। পৃথিবীতে লাইভ সংবাদ সম্মেলনে পোশাকের হলুদ রঙ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্পেস সেন্টার থেকে আরটেমইভ বলেন, একটা রঙ বাছাই করা আমাদের জন্য জরুরি হয়ে উঠেছিল। আমাদের চারপাশে হলুদ রঙের অনেক কিছু জমা হয়েছে। তাই এসব কাজে লাগানো জরুরিও ছিল।
রাশিয়া যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে বিশ্বে অনেকেই ইউক্রেনের জাতীয় পতাকা দেখিয়ে দেশটির প্রতি নিজেদের সমর্থন জানিয়েছে। স্পেস স্টেশনে গবেষণার কাজ করবেন এই তিন নভোচারী; যা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলবে। এই তিন নভোচারীর পৌঁছানোর পর সেখানে থাকা অপর তিন নভোচারী পৃথিবীতে ফেরৎ আসবেন; আগামী ৩০ মার্চ তারা মহাকাশ স্টেশন ছাড়বেন।