আসুন, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের প্রতিজ্ঞা নিই : প্রধানমন্ত্রী

এই উন্নয়নই বঙ্গবন্ধুর প্রতি বড় সম্মান : রাজাপাকসে

| শনিবার , ২০ মার্চ, ২০২১ at ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ

জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠুক। বাংলাদেশের একটি মানুষও ক্ষুধার্ত থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, প্রতিটি মানুষের ঘরে আমরা আলো জ্বালব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দশ দিনের আয়োজনের তৃতীয় দিনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হতে পেরেছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা সরকারে থেকে উদযাপন করার সুযোগটা পেয়েছি বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলাম বলে। তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। যে বিদেশি অতিথিরা এই আয়োজনে যোগ দিয়েছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানান সরকার প্রধান। তার সভাপতিত্বে এদিনের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভি লাভরফও বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
অপরদিকে শ্রীলঙ্কাকে বাংলাদেশের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একই ধরনের মনোভাব পোষণ করে এবং দুই দেশ পরস্পরকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু এবং তিনি সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে অবস্থান করেন। আমিও চেষ্টা করি সেই বন্ধুত্বের প্রতিদান দিতে। এ সময় তিনি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের যোগদান তার নিজের এবং শ্রীলঙ্কার জনগণের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী এবং তার দেশের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানান। একইসঙ্গে দুই দেশের জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে দৃঢ় করার বার্তা দেন।
অপরদিকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেন, বাঙালির জোড়া উদযাপনে এই উন্নয়নচিত্রই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি জাতির শ্রেষ্ঠ সম্মান।
রাজাপাকসে বলেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে। অনেকে মনে করে থাকেন, দুই হাজার বছর আগে বঙ্গ অঞ্চল থেকে মানুষ শ্রীলংকায় গিয়েছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকেই দুই অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্য চলছে বলেও মনে করা হয়।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদাতা সামনের সারির দেশ হিসেবে শ্রীলংকার ভূমিকার কথা স্মরণ করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন নীতিনিষ্ঠ মানুষ। বাংলার মানুষের জন্য তিনি তার সারাটি জীবন উৎসর্গ করেছেন, এই বাংলার ভাষা এবং তাদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য। স্বাধীনতার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এবং একটি নতুন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে তিনি ছিলেন দৃঢ়চিত্ত। দুর্ভাগ্যবশত তিনি তার প্রিয় দেশের জন্য যে স্বপ্ন লালন করছিলেন তা দেখে যাওয়ার জন্য বেঁচে থাকতে পারলেন না।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনের কথা স্মরণ করার পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সালাম জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত নিজের পরিবারের সদস্যসহ সেই রাতে নিহত সবার কথা গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করেন সরকার প্রধান।
উল্লেখ্য, আয়োজনের প্রথম দিন বুধবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। এছাড়া নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী ২২ মার্চ, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ২৪ মার্চ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সঙ্গী হবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচমেকে পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্যদের ছাত্রাবাস ত্যাগের নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধঅপারেশন সার্চ লাইটের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়