আলো হয়ে ছড়িয়ে পড়ুক ‘মানবতার দেয়াল’

জোনাকী দত্ত | রবিবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

নিঃস্বার্থভাবে কল্যাণকর কাজে অংশীদার হওয়ার নাম মানবতা। শীতের সময় দেশের আনাচে কানাচে, ফুটপাতে, বস্তিতে অনেক অসহায় মানুষ শীত বস্ত্রের অভাবে দিন যাপন করে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা চাইলেই তাদের অব্যবহৃত কাপড় দিয়ে শীতার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারে।

২০১৫ সালে ইরানের উত্তরপূর্বের শহর মাশাদে শীতকালে প্রথম অজ্ঞাত এক ব্যক্তি শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এমন উদ্যোগের নাম করা হয়েছিল ‘মহানুভবতার দেয়াল’। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গণমাধ্যমে সে খবর প্রচারিত হয়েছিল। সংবাদ প্রকাশের পর জনমনে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল এমন উদ্যোগের জন্য। এই ঘটনার পর ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকেই বাংলাদেশের মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং ২০১৭ সালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল এস সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। কিশোরগঞ্জের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজনীন মিষ্টির নেতৃত্বে ‘মহানুভবতার দেয়াল’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। বিদ্যালয়ে নোটিশ বোর্ডের পাশে মহানুভবতার দেয়াল নামে ওখানে হ্যাংগার ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এই দেয়ালের একপাশে লেখা আছে ‘তোমার যা প্রয়োজন নেই তা এখানে রেখে যাও, আবার অন্য পাশে লেখা ‘তোমার দরকারি জিনিস পেলে নিয়ে যাও’। শীতের তীব্রতা থেকে যাতে অসহায় নারী, পুরুষ, শিশু রক্ষা পায় সে বিবেচনায় তরুণেরা এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারা এই মহৎ উদ্যোগ দ্রুত বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে দেশের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় যদি তরুণেরা একটি করে মানবতার দেয়াল গড়ে তোলেন তাহলে প্রচণ্ড শীতে গরীব মানুষেরা একটি গরম পোশাক পেয়ে শীত নিবারণ করতে পারবে। আমাদের তরুণ সমাজ সংঘবদ্ধভাবে যে কোন সংকট মোকাবেলায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে যা একটি জাতির মনোবল বাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। মানবতার এই উদ্যোগ আলো হয়ে ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাদ্যে ভেজাল থেকে মুক্তি চাই
পরবর্তী নিবন্ধমন গহীনে