আব্বাস উদ্দীন আহমদ : কালজয়ী লোকসংগীত শিল্পী

| শুক্রবার , ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ

আব্বাস উদ্দিন আহমদ। লোকসংগীত শিল্পী। কাজী নজরুল ইসলামের ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ’ গানটি যার কণ্ঠে জনপ্রিয়তা অর্জন করে তিনি আব্বাস উদ্দীন আহমদ। যার নাম শুনলে আমাদের মনে পড়ে ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই কত রব আমি পন্থের দিকে চায়া রে…’ কিম্বা ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে…’। ১৯০১ সালের ২৭ অক্টোবর আব্বাস উদ্দীন আহমদ ভারতের কুচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু শৈশব থেকেই গানে গানে তানে তানে পথ চলতেন আব্বাস উদ্দিন আহমদ। প্রচণ্ড এক ভালোবাসা ছিল তাঁর গানের প্রতি। গানের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। আব্বাস উদ্দিন তুফানগঞ্জ স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং পরে কুচবিহার কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। এরপর সংগীত চর্চাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে তার সাথে পরিচয় হয় কাজী নজরুল ইসলাম, ইন্দুবালা, জগত ঘটক, কাজী মোতাহার হোসেন, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, আঙ্গুরবালা সহ অসংখ্য শিল্পীর সাথে। কাজী নজরুল ইসলামের অনুপ্রেরণায় বেশ কিছু গান (ঠুমরী, গজল) রচনা করেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ’ গানটি আব্বাস উদ্দিনের কণ্ঠে বহুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এগানটি রেকর্ডের পর যখন দেখলেন অল্পদিনেই এ গানটি হিন্দু মুসলিম সবার মুখে মুখে এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল তখন থেকেই তিনি কাজী নজরুল ইসলামকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছিলেন অনেক বাংলা ইসলামিক গজল। এ ছাড়াও তিনি উর্দু, জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, দেহতত্ত্ব, মার্সিয়া, পালাগান ইত্যাদি গানও তিনি গেয়েছেন। শুধুই কি গান? আব্বাসউদ্দিন আহমেদ মোট ৪টি বাংলা চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। সিনেমাগুলো হলো ‘বিষ্ণুমায়া ’ (১৯৩২), ‘মহানিশা’ (১৯৩৬), ‘একটি কথা’ এবং ‘ঠিকাদার’ (১৯৪০)। আব্বাসউদ্দীনের গানের রেকর্ডগুলি এক অমর কীর্তি। আমার শিল্পী জীবনের কথা (১৯৬০) তাঁর রচিত একমাত্র গ্রন্থ। তিনি সঙ্গীতে অবদানের জন্য মরণোত্তর প্রাইড অব পারফরমেন্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে (১৯৮১) ভূষিত হন। ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাবনার অন্তর্জালে
পরবর্তী নিবন্ধরাওজাতুম মিন রিয়াজিল জান্নাহ : দুনিয়াতেই দৃশ্যমান বেহেশতের বাগান