জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আগামী রোববার অভিযোগ দাখিল করবে প্রসিকিউশন। কৌঁসুলি মিজানুল হক বলেন, গত মঙ্গলবার আবু সাঈদ হত্যা মামলায় প্রসিকিউশনে প্রতিবেদন দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা। এতে ৩০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তার পরও প্রসিকিউশন যাচাই–বাছাই করে আগামী রোববার ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করবে। নবগঠিত ট্রাইব্যুনাল–২ এ এ অভিযোগ দাখিল করা হবে বলে তিনি জানান। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে গত ১৫ জুন জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৪ জুলাই ঠিক করে দেয়। একইসঙ্গে এই মামলার শুনানির জন্য ২৬ জুন দিন ঠিক করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিল।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। সেদিন সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করার মধ্যে তাকে গুলি করার ভিডিও সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে ছাত্র–জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সেদিন থেকেই সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন থেকে সারা দেশে ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর একের পর এক মৃত্যু, সরকারি সম্পত্তিতে হামলা, আগুনের মধ্যে ১৯ জুলাই কারফিউ দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি শেখ হাসিনা সরকার। তুমুল গণ–আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট পতন হয় টানা সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের শাসন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা ভারতে চলে যান। এখনও তিনি সেখানেই আছেন।
সরকার পতনের আন্দোলনে সরকারি হিসাবে সাড়ে আটশর মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় বিগত সরকারের নেতৃত্ব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্তা এবং মাঠ পর্যায়ে যাদের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ আছে, তাদের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যে ট্রাইব্যুনালটি মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিল।