আবুল হাসান : নিঃসঙ্গতার শিল্পী

| বৃহস্পতিবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলা কবিতায় এক মহৎ কাব্যশিল্পের জনক কবি আবুল হাসান। কাব্যচর্চার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করেছেন তিনি। স্বল্প পরিসর জীবনে তাঁর কাব্য সাধনার ব্যাপ্তি মাত্র এক দশক। কিন্তু এই এক দশকেই বাংলা কবিতার জগতে এক বিশিষ্ট স্থান করে নিয়েছেন আবুল হাসান।
আবুল হাসান কবির সাহিত্যিক ছদ্মনাম। প্রকৃত নাম আবুল হোসেন মিয়া। জন্ম ১৯৪৭ সালের ৪ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায়। ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি অনার্সে ভর্তি হন।
কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন তিনি। কবি আবুল হাসানের কবিতার প্রধান অভিব্যক্তি নিঃসঙ্গতা। সমকাল, সমাজ বাস্তবতা, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রভৃতি নানাবিধ বিষয়াবলী তিনি কবিতায় ধারণ করেছেন এক ধরনের নিঃসঙ্গতা আর বিচ্ছিন্নতার আবহে যা এক মহৎ কাব্যশিল্পের দ্যোতনায় পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা। আত্মগত দুঃখবোধ, বিচ্ছিন্নতা, নিঃসঙ্গচেতনা, মৃত্যুভাবনা – এসবের পাশাপাশি স্বদেশ চেতনায় উদ্বুদ্ধ কবির অন্তর্গত দ্রোহও এক অদ্ভুত বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন। তবে তা ছাপিয়ে মাতৃভূমি আর সমকালকে সুন্দর দেখার আকাঙ্ক্ষাও স্পষ্টতই প্রতীয়মান। আবুল হাসানের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ : ‘রাজা যায় রাজা আসে’, ‘যে তুমি হরণ করো’, ‘পৃথক পালঙ্ক’; কাব্যনাট্য ‘ওরা কয়েকজন’; গল্প সংকলন ‘আবুল হাসান গল্প সংগ্রহ’ ইত্যাদি। তেইশ বছর বয়সে ১৯৭০ সালে এশীয় কবিতা উৎসবে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন কবি আবুল হাসান। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। সাহিত্যে স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৫ সালে কবিতায় মরণোত্তর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৮২ সালে সাহিত্যে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন কবি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধনৃশংসতা আর কত?