আবার এলো যে সন্ধ্যা

নাজনীন আমান | সোমবার , ১১ মার্চ, ২০২৪ at ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ

৫ই মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার, আরও একবার জমকালো এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার সাক্ষী হয়ে গেলাম। আর এর আয়োজন ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল এন্ড কলেজ,চট্টগ্রাম। অংশগ্রহণকারী ৩৫৪ জন ছাত্র ছাত্রী, সকল শিক্ষক মন্ডলী যাঁরা অক্লান্ত ও অব্যক্ত পরিশ্রম করে এমন মোহনীয় অনুষ্ঠানের রূপ দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তাঁদের সকলের প্রতি জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ, অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।

সন্ধ্যা ৭.৩০। স্থান শহীদ ক্যাপ্টেন জসীম হল, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট। আমন্ত্রণ পত্রে যে সময় বেঁধে দেওয়া হল ঠিক সেই সময়েই উপস্থিত হলেন প্রধান অতিথি। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাইনুর রহমান। পবিত্র কুরআন পাঠ, বাংলা ও ইংরেজিতে তরজমার মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের ১ম পর্ব। এরপর কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল রোমানা জামান প্রধান অতিথিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় কৃতিত্ব অর্জনের জন্য কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে ট্রফি তুলে দেন প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন মো.ফজলুল করিম (লেকচারার ইন ইংলিশ), ও সিনিয়র শিক্ষিকা সাগুফতা রেহনুমা। ২য় পর্বে পরিবেশিত হয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এর উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিল স্কুল কলেজের চারজন প্রাণবন্ত ছেলে মেয়ে। প্রতিটি পরিবেশনাই ছিল আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর। প্রত্যেকের উচ্ছ্বল ও আত্নবিশ্বাসী পরিবেশনা দর্শক হৃদয় করেছে জয়। প্রধান অতিথি নিজেও তালে তাল দিচ্ছিলেন আর তাতেই বোঝা যাচ্ছিল সবাই কত আনন্দ নিয়ে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করছেন। ব্যান্ড সংগীত শুনে মনে হল আমরা বোধহয় আইয়ুব বাচ্চু, জেমস এর কনসার্টে। রাগ শাস্ত্রীয় সংগীত ও বাদ্যযন্ত্র শুনে এক মুহূর্তের জন্য চলে গেলাম ওস্তাদ রবি শংকর, কিংবা উদিত নারায়ন বা প্রয়াত পঙ্কজ উদাস অথবা ওস্তাদ ক্যাপ্টেন আজিজুল হক বিখ্যাত বংশীবাদকের সুরের মুছর্নার কোন আসরে।

অনুষ্ঠানটি ছিল বেশ পরিচ্ছন্ন ও স্বচ্ছ। কারও মধ্যে নেই কোন বিরক্তি নেই কোন ক্লান্তি। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো পুরো অনুষ্ঠানটি ঘড়ির কাঁটা মেনেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোন সময়ের বিচ্যুতি ঘটেনি। এমনকি প্রধান অতিথির বক্তব্যও ছিল সংক্ষিপ্ত কিন্তু মূল্যবান। সময়ের প্রতি তারা যথেষ্ট যত্নবানই বটে। অনুষ্ঠানটি সফলভাবে পরিবেশন করার জন্য আবারও সকলকে জানাই কুর্নিশ ও আন্তরিক ধন্যবাদ। নিঁখুতভাবে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করার জন্য অধ্যক্ষ মহোদয়কে জানাই কৃতজ্ঞতা। জীবনের যান্ত্রিকতা ও শত ব্যস্ততার মাঝে অনুষ্ঠানটি কিছুটা হলেও প্রাণের স্পন্দন ঘটিয়েছে। আর তাই তো বাড়ি যেতে যেতে মন গেয়ে উঠলো গান —-

এই মুখরিত জীবনের চলার পথে

অজানা হাজার কত কাজের ভিড়ে

ছোট্ট বেলার শত রং করা মুখ

সুর তুলে আজও এই মনটি ঘিরে

পূর্ববর্তী নিবন্ধসামাজিকতা, মানবিকতা ও রাজনীতির সমন্বয় যদি করি
পরবর্তী নিবন্ধস্মৃতির শহর চট্টগ্রাম এ শহরের মুক্তিযোদ্ধারা