আবারও লং মার্চ শুরুর ঘোষণা ইমরানের

হাসপাতাল থেকে বাড়িতে

| রবিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২২ at ১০:১৬ অপরাহ্ণ

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। দেশটির স্থানীয় সময় বিকেলে লাহোরের শওকত খানম হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

সংবাদমাধ্যম জিও এবং ডন জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মাধ্যমে জামান পার্কে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন লাহোরের সেই বাড়িতেই তিনি অবস্থান করছেন।

ইমরান বাড়ি ফেরার আগে তার ওপর হামলার বিষয়ে মন্তব্য করেন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান। আজ রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পিটিআই প্রধানের ওপর হামলার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, “এটি আসলে একটি অভিনয়।”

মাওলানা ফজলুর রহমান ইমরানের ইনজুরি নিয়ে বিভ্রান্তিতে ভুগছেন বলে জানান। তিনি বলেন, “ইমরান একটি গুলি খেয়েছেন নাকি দু’টির বেশি। এক পায়ে নাকি দুটোতেই? তিনি আবার আশ্চর্যজনকভাবে কাছের কোনো হাসপাতালে না গিয়ে লাহোরে গিয়েছিলেন!”

তার আগে হাসপাতালে বসেই সংবাদ সম্মেলন করেন ইমরান খান। সেখানে তিনি নিজের ওপর হামলার তদন্তের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে লংমার্চে হামলার ঘটনার নেপথ্যে প্রধনামন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ ও সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সাল ছিলেন। তারাই চক্রান্ত করে ঘটনাটি ঘটান। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারাই যদি তদন্তের নেতৃত্ব দেয় তাহলে বিচার বিভাগীয় কমিশন কী করবে?”

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার প্রথম কথা হলো বিচার বিভাগীয় কমিশন কী করবে যেখানে আমি যাদের নাম বলেছি তারাই তদন্তের প্রধান হবেন? তিনি হামলার ঘটনায় একটি স্বচ্ছ তদন্ত চান কারণ এখানে একটি ‘সম্পূর্ণ প্যাটার্ন’ রয়েছে।”

তাই প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেনা কর্মকর্তা ফয়সালের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

ইমরান আরও বলেন, “পাঞ্জাবের কর্তৃপক্ষ হামলার বিষয়ে মামলা নিতে অস্বীকার করছে। তাদের ভাষ্য মামলা থেকে সেনা কর্মকর্তা ফয়সালের নাম সরিয়ে নিতে হবে। তিন দিন হয়ে গেছে পাঞ্জাব সরকার তথা জোট সরকারের কারণে আমি মামলা নথিভুক্ত করতে পারিনি।”

তারা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া যাবে কিন্তু ফয়সালের বিরুদ্ধে নয়!”

পিটিআই চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আমার পুরোপুরি বিশ্বাস এই তিনজনই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হামলা ঘটিয়েছে। মামলা নথিভুক্ত করা আমার অধিকার। আমি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী। আমি যদি মামলায় তার (সেনা কর্মকর্তা ফয়সাল) নাম না দিতে পারি আমার প্রশ্ন- জাতি ও সাধারণ মানুষের জন্য কেমন অধিকার আশা করা যায়?”

সংবাদ সম্মেলনে আগামী মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ওয়াজিরাবাদের একই পয়েন্ট থেকে আবারও লং মার্চ শুরুর ঘোষণা দেন ইমরান খান।

তিনি বলেন, “আমি ও অন্য ১১ জন সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম যেখানে মোয়াজ্জামকে শহীদ করা হয়েছিল। সেখান থেকেই আবার আমাদের মার্চ শুরু হবে।”

তিনি বলেন, “আমি লাহোর থেকে মার্চের ভাষণ দেব। আমাদের লং-মার্চের গতির ওপর নির্ভর করে আগামী ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রাওয়ালপিন্ডি পৌঁছব।”

মার্চটি রাওয়ালপিন্ডিতে পৌঁছলে তিনি নিজেও এতে যোগ দিয়ে কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লং মার্চের সপ্তম দিন ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় তিনিসহ আহত হন ৭ জন। একজনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলে। হামলাকারীকেও গ্রেফতার করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে দুই ভাই আটক
পরবর্তী নিবন্ধরপ্তানি আয়ে ডলারের দর বৃদ্ধি