বিএনপি হাঁটুভাঙা নয় বরং আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা দেখে আওয়ামী লীগেরই কোমর ভেঙে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকায় নয়াপল্টনে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব আগের দিন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে এমন প্রতিক্রিয়া জানান। খবর বিডিনিউজের।
ফখরুল বলেন, কালকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন যে, বিএনপির না কি হাঁটুভাঙা। আমাদের যে হাঁটু ভাঙেনি- এটা তো টের পাচ্ছেন। লাঠিও আমরা নেইনি। তো আপনাদের ইতিমধ্যে কোমর ভেঙে গেছে। আপনারা শুধু লাঠি নয়, আপনারা ইতিমধ্যে রাম দা, তলোয়ার এবং পুলিশের বন্দুকের ওপরে এখন হাঁটছেন। আপনারা জনগণের সঙ্গে নাই, সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। সেজন্য আজকে আপনাদেরকে সেই রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন গত ২২ আগস্ট থেকে জনগণের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছি, সেই আন্দোলনে যখন জেগে উঠছে মানুষ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আহ্বানে, তখন তারা একে দমন করবার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিবের অভিযোগ, তারা ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে, তারা খুন করে, তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে ২৫ হাজারের উপরে নেতা-কর্মীদের আসামি বানিয়েছে, ৩ হাজারের মত তারা আমাদের ছেলেদের আহত করেছে। আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি এর কারণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে, শান্তিপূর্ণ মিছিলে, ছাত্রদলের একেবারে একটা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে তারা লাঠি, বন্দুক এবং টিয়ার গ্যাস নিয়ে আক্রমণ শুরু করেছে। তিনি সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে দেশের সব ছাত্র, তরুণ ও যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনও সময় আছে-ওই সমস্ত উল্টো-পাল্টা কথা না বলে আপনারা পদত্যাগ করুন শান্তিতে। সেইভ এঙিট নেন এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন, সংসদ বিলুপ্ত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এ সমাবেশে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এদিন তাদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা দেখা গেলেও লাঠি দেখা যায়নি।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমরা লাঠি লেখা করি না- ওটা আপনারা খেলেন। আপনারা দেখিয়েছেন লাঠিপেটা করে কিভাবে মানুষ হত্যা করতে হয় ১/১১ সময়ে। ১/১১ পূর্ববর্তীতে যে নরককাণ্ড ঘটিয়েছেন, যে নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা কখনই দেশের মানুষ ভুলবেন না।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে সাবেক ছাত্র নেতা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, এসএম জিলানী, মোনায়েম মুন্না, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান, রাকিবুল ইসলাম ও আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বক্তব্য রাখেন।
