সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কোনো ছাড় নেই : সিএমপি কমিশনার

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কোনো ছাড় নেই বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। তবে মহানগরে কোন মণ্ডপ ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই। তবে আমরা যেকোনো খারাপ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত আছি। তাই কিছু মণ্ডপকে গুরুত্বপূর্ণ এবং কিছু মণ্ডপকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, নগরীর ২৮২টি মণ্ডপের কোনটিকেই ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। প্রতিটি পূজা মণ্ডপ ঘিরেই চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মণ্ডপের অবস্থা এবং লোক সংখ্যার যাতায়াতের কথা মাথায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ হিসেবে কিছু মণ্ডপ চিহ্নিত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপের প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা জানিয়েছেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, পূজা মণ্ডপকে ঘিরে সাদা পোশাকে পুলিশ, বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও সোয়াতের বিশেষায়িত টিমও কাজ করবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেই ভাবেই স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, প্রতিটি মণ্ডপকে ঘিরে আমরা একটা শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করেছি। এ শৃঙ্খলা কমিটি আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। ইতোমধ্যে পূজার আয়োজনকারী যারা, তাদেরকে আমরা শৃঙ্খলা বিষয়ক কিছু অনুরোধ জানিয়েছি। যেমন, পূজা মণ্ডপে নারী-পুরুষের প্রবেশের জন্য আলাদা প্রবেশ-বাইরে যাওয়ার পথের ব্যবস্থা রাখা। সিসিটিভি ক্যামেরার একটি সংযোগ স্থাপন করা, যাতে কোনো ঘটনা ঘটলে পরবর্তীতে তার সূত্র পেতে পারি। এছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখা, যাতে তারা দর্শনার্থীদের নজরদারি করতে পারে এবং কোনো কিছু সন্দেহজনক মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে অবহিত করতে পারে। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারাও কাজ করবে. তারা তথ্য সংগ্রহ করবে।
সামপ্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টিকারী দুষ্টুচক্রের বিরুদ্ধে কোনো মোটিভ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনের হাত অনেক লম্বা। কেউ কেউ হয়তো, কোনো কোনো সময় কিছু একটা কাজ করে আমাদের বিভ্রান্ত করছেন, অস্বস্তিতে ফেলছেন। আইনের চূড়ান্ত বিচারে তারা কিন্তু অবশ্যই পরাজিত হবেন। আমি মনে করি আইনগত একটা দিক আছে, অতীতের ঘটনা নিয়ে আইনগতভাবে যেভাবে এগোনো দরকার আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি। পুলিশ কমিশনার বলেন, কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের জন্য কোনো কার্যক্রম বা ষড়যন্ত্র করলে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে, তাদের প্রতি কোন ছাড় নেই। পাশাপাশি আমি বিশ্বাস করি, অসাম্প্রদায়িক শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ বিষয়গুলো যদি তারা আমলে নেয় এবং নিজেরা যদি সবসময় সতর্ক থাকে, তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরা সফল হতে পারবে না।
তিনি বলেন, গতবার জেএমসেন হলে হামলায় জড়িত ৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বর্তমানে তারা জামিনে চলে এসেছে। পূজা উদযাপন পরিষদ এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে সিএমপি কমিশনার বলেন, যারা জামিন নিয়ে বের হয়ে এসেছেন তাদের প্রতি আমাদের নজরদারি আছে। মামলাটির শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রতিমা বির্সজনের জন্য নয়টি জায়গা নির্ধারিত রয়েছে। বিসর্জনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আয়োজকদের অনুরোধ করেছি, প্রতিমা বিসর্জনের কার্যক্রম সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করতে। প্রতিটি উৎসবে চট্টগ্রামের মানুষ অসামপ্রদায়িক মনোভাব পোষণ করে থাকেন, সেটা অব্যাহত থাকবে। সবার সঙ্গে মিলে এই উৎসবকে সর্বজনীন একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন করতে চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআপনাদের তো কোমর ভেঙে গেছে
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারকে প্রকৃতিবান্ধব পর্যটন নগরের রূপ দিতে হবে