আনন্দের দিনে শোকের ছায়া

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ছাত্রলীগ কর্মী আশিকুর রহমান রোহিতের ভাইদের পরিকল্পনা ছিল ১৫ জানুয়ারি দিনটিতে অনেক অনেক আনন্দ করবেন। স্মরণীয় করে রাখবেন দিনটিকে। পনেরো জানুয়ারি বড় ভাই শাহেদের বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল। দিনটি স্মরণীয়ই হয়ে গেল তাদের কাছে; তবে আনন্দের নয়, শোকের। কারণ, নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া ডিসি রোডে এক সপ্তাহ আগে ছুরিকাঘাতে আহত ছাত্রলীগ কর্মী আশিকুর রহমান রোহিত (২২) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ১৫ জানুয়ারি ভোরে মারা যান। রোহিতের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তার পরিবারটিতে নেমে এসেছে আনন্দের বদলে শোকের ছায়া। ওমরগণি এমইএস কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র রোহিত পরিবারের সাথে বাকলিয়া ডিসি রোডে থাকতেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন রোহিত। সবার বড় শাহেদুর রহমান, মেজো ভাই জাহেদুর রহমান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ১৫ জানুয়ারি রোহিতের বড় ভাই শাহেদুর রহমানের বিয়ের তারিখ ধার্য্য ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক চলে আসছিল। কিন্তু এ দুর্ঘটনার পর বিয়ের আয়োজন বাতিল করা হয়।
বড় ভাই শাহেদুর রহমান গতকাল আজাদীকে বলেন, ১৫ জানুয়ারি বিয়ের তারিখ অনেক আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ভাইয়ের দুর্ঘটনার পর আপাতত বিয়ে বাতিল করা হয়। এ পরিস্থিতিতে বিয়ে সম্ভব না। সাগরিকায় বিয়েটা হওয়ার কথা ছিল। সব ভাই মিলে বিয়েতে একসাথে যাওয়ার কথা ছিল। আনন্দ করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হলো না। চিরদিনের মতো ভাইকে হারিয়ে ফেলেছি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহেদ।
এর আগে বিকেলে বাদ আসর চকবাজারস্থ ফালাহ গাজী মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় রোহিতের জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষের অংশ নেয়।
স্থানীয় লোকজন রোহিতের মৃত্যুর পেছনে নির্বাচনী সহিংসতাকে দায়ী করলেও পুলিশ বলছে, আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সাথে রোহিতের মৃত্যুর কোনো যোগসূত্র নেই। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড। এলাকাবাসীর একটি অংশ বলেছে, এলাকায় মাদক বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে মহিউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সাথে বিরোধ হয়েছিল। মাদক, জুয়াসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত মহিউদ্দিনের সাথে সৃষ্ট বিরোধ থেকেই এ খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
রোহিতকে ছুরিকাঘাতের ঘটনার পরদিন ৯ জানুয়ারি রোহিতের মেজো ভাই জাহিদুর রহমান বাদি হয়ে বাকলিয়া থানায় তিনজনকে এজাহারনামীয় আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে প্রধান আসামি করা হয়েছে মহিউদ্দিনকে। বাকী দু’জন হলেন, বাবু এবং সাবু। ঘটনার পর থেকে এ তিনজন পলাতক রয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে নতুন শনাক্ত ৯১ মৃত্যু ১
পরবর্তী নিবন্ধছুরিকাহত ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যু, অবরোধ বিক্ষোভ