আজাদী মালিকের ৪৮ লাখ টাকা আত্মসাতে কর্মচারী

অপরাধ স্বীকার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী সম্পাদক ও প্রকাশক এম এ মালেক বিশ্বাস করেই আনোয়ারার বাসিন্দা নুরুল ইসলামকে নিজের প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিয়েছিলেন। সেই কর্মচারী দীর্ঘ পনের বছর ধরে মালিকের টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে একটু একটু করে নিজের আখের গুছিয়েছেন। অবশেষে চলতি মাসের ৫ তারিখ তার জারিজুরি ফাঁস হলে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় দৈনিক আজাদীর এইচআর অ্যান্ড লজিস্টিকস অফিসার সরোয়ার জাহান সম্পাদক এম এ মালেকের পক্ষে নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা (নং ৫, ধারা-৪০৬/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০) দায়ের করেন।

কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাহিদুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মালিকের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে এ ধরনের অপরাধীরা নিজের আখের গুছাতে গিয়ে মালিককে একপর্যায়ে সর্বস্বান্ত করে দেন। আমরা অভিযোগ পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি স্বীকার করেছেন তিনি মোট ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৬৬০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মামলার বাদী সরোয়ার জাহান অভিযোগ করেন, দৈনিক আজাদী সম্পাদক ও প্রকাশক এম এ মালেকের মালিকানাধীন একটি ভবনের কেয়ারটেকার মো. আসাদুজ্জামান ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ভাড়া সংগ্রহ করে আসামি নুরুল ইসলামের হাতে দিতেন। নুরুল ইসলামের দায়িত্ব ছিল ইউসিবি ব্যাংক আন্দরকিল্লা শাখায় সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে এবং পরে ব্র্যাক ব্যাংক মোমিন রোড শাখায় প্রতি মাসে টাকা জমা দেয়ার কথা।

মালিকের নির্দেশে বাদী সরোয়ার জাহান, আজাদী পত্রিকা অফিসের ম্যানেজার সাখাওয়াত হোসেন ও সিনিয়র অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. ইমরান হোসেন ইউসিবি ব্যাংক আন্দরকিল্লা শাখার হিসাব নম্বর এবং ব্র্যাক ব্যাংক মোমিন রোড শাখার হিসাব নম্বর যাচাই বাছাই করে দেখেন, নুরুল ইসলাম ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ভবনটির কেয়ারটেকার আসাদুজ্জামানের কাছ থেকে ১,৪৯,৭০৬ টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ইউসিবি ব্যাংকে ১,২৯,৭০৬ টাকা জমা দিয়ে ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। একইভাবে ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে ১৩,৪০০ টাকা, ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে ৩৫,৮০০ টাকা, ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে ১,৬৫,১২৮ টাকা, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ২,৮৫,৮৭৬ টাকা, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে ২,৯৪,৫৫০ টাকা, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ৪,৩৮,৯৩১ টাকা, ২০১১-২০১২ অর্থবছরে ৩,৬৯,৪৬০ টাকা, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ৩,৬০,০০০ টাকা, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে ২,৩২,৫৪০ টাকা, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ২,৩৯,৯০০ টাকা, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৪,৭৭,২০০ টাকা, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৩,৫১,৭৫০ টাকা, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৩,৪৯,২৫০ টাকা, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৪,২৭,০০০ টাকা, ২০১৯ ২০২০ অর্থবছরে ৩,৩৯,৮০০ টাকা, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২,৫২,৭০০ টাকা, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১,৯৭,৭৭৫ টাকাসহ মোট ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৬৬০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

বিষয়টি আজাদী কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে সম্পাদক ও প্রকাশক এম এ মালেক আসামি নুরুল ইসলামকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদর্শন করে হিসাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করেন, উল্লেখিত অংকের টাকা তিনি ব্যাংকে জমা দেননি।

এদিকে আসামি নুরুল ইসলাম ৩০০ টাকার স্টাম্পে স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করে উল্লেখিত টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রাখার কথা স্বীকার করেছেন। পরে গ্রেপ্তারের পর থানা পুলিশের কাছেও একই বিবৃতি দিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ১০৭ টন কাপড় জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধফ্লাইওভারে ছিনতাই দুর্ঘটনা রোধে ১৫ সুপারিশ