আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কে ইবাদতখানা নির্মাণ প্রসঙ্গে

সরওয়ার আরমান | শুক্রবার , ২৯ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কে সন্ধ্যায় দৃষ্টিনন্দন আলো-আঁধারি ঝলকানি যে কারোর ভালো লাগবে নিঃসন্দেহে। চট্টগ্রামের সবচেয়ে আধুনিক ‘জাম্বুরি পার্ক’। আগ্রাবাদ ১০তলা ভবনের সামনে স্থাপত্য অধিদপ্তরের নকশায় ৮.৫৫ একর জমির জমির ওপর রোপণ করা হয়েছে ৬৫ প্রজাতির ১০ হাজার গাছের চারা। এর মধ্যে আছে সোনালু, নাগেশ্বর, চাঁপা, রাধাচূড়া, বকুল, শিউলি, সাইকাস, টগর, জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। খোলা চত্বরে লাগানো হয়েছে সবুজ ঘাস। পার্কে বসার সুযোগের পাশাপাশি হাঁটার জন্য রাখা হয়েছে ৮ হাজার ফুট পথ। ৫০ হাজার বর্গফুট জলাধার ও দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা যে কারো নজর কাড়বে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত এই উদ্যান। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটি টাকা। গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এই পার্কের শুভ উদ্বোধন করেন। জাম্বুরি পার্ক মূলত শরীরচর্চা ও প্রাকৃতিক পরিবেশে বিশ্রাম বা সময় উপভোগের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১৫ সালে। নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে ১৪টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। জলাধারের পাশে রয়েছে দুটি পাম্প হাউস। আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্ক বীর চট্টলাবাসীর চাহিদার প্রতিফলন যা বর্তমান সরকারের এক যুগোপযোগী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। পার্কে প্রবেশের জন্য রয়েছে ছয়টি গেট। উত্তর পাশে দুটি, দক্ষিণ পাশে দুটি, পূর্ব পাশে ১০তলা ভবনের গেটের সামনে একটি, পশ্চিম পাশে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে একটি বড় গেট আছে। নাগরিকদের জন্য উত্তর-পূর্ব কোণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রাখা হয়েছে আধুনিক শৌচাগার। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর কিছু নিয়মকানুনের আলোকে ‘ছুটির দিনসহ প্রতিদিন ভোর ৫.৩০টা থেকে সকাল ১০.০০টা এবং বিকেল ৩.৩০ থেকে রাত ৮.০০ পর্যন্ত খোলা থাকে এই পার্ক। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্দেশক্রমে পার্কে বিনা মূল্যে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ প্রতিদিন পার্কে অবস্থান করেন। তবে এতে কোন প্রকার ইবাদতখানা না থাকার ফলে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদের বিশেষ করে আছর মাগরিবের নামাজে বিলম্ব হয় কেননা নিরাপত্তা বেষ্টনীর দরুণ দক্ষিণ দিকের গেট বন্ধ থাকায় পূর্ব-পশ্চিম দিকের গেট দিয়ে পার্শ্ববর্তী মসজিদে নামাজ পড়তে অগ্রসর হলে সময়ক্ষেপণ হয়। এ জাতীয় অন্যান্য পার্কে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদ বা ইবাদতখানা থাকলেও বর্তমানে এই জাম্বুরি পার্কে নামাজের কোন সুব্যবস্থা নেই। সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদের দাবীর আলোকে সরকারের গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি যে অতিসত্বর আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কে একটি ইবাদতখানা নির্মাণ করা হোক যাতে চট্টলাবাসীদের বিনোদনের পাশাপাশি নামায আদায়ের মাধ্যমে মহান আল্লাহকে স্মরণ করতে পারে। করোনাকালীন এই সময়ে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে সবার মনে পবিত্রতা, সাংস্কৃতিক মনোভাব ও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বহিঃপ্রকাশ গড়ে উঠুক। জীবন হোক দীর্ঘায়ু। ইবাদতের মাধ্যমে সবাই মঙ্গল লাভ করুক। কবুল হোক সকলের মনের প্রত্যাশা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফ্লাইওভারে দুর্ঘটনা
পরবর্তী নিবন্ধআপনজনের দুঃসময়ে পাশে থাকা জরুরি