সকাল থেকেই এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে কিশোর ক্রিকেটারদের পদচারনা। লক্ষ্য সবার একজন ভাল ক্রিকেটার হওয়া। সাদা পোষাকে মাঠে আসা ক্রিকেটারদের চোখে মুখে যেন ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু সবাই কি আর ক্রিকেটার হতে পারবে। তাই বলে চেষ্টা করতে দোষ কি। আর সে চেষ্টার প্রথম ধাপ হিসেবে গতকাল বাছাই পরীক্ষা উতরানোর জন্য মাঠে হাজির তরুন কিশোররা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের তৃনমূল থেকে ক্রিকেটার তুলে আনার পদক্ষেপ হিসেবে চট্টগ্রামে বাছাই করা হচ্ছে অনূর্ধ্ব–১৪, ১৬ এবং ১৮ বছর বয়সী ক্রিকেটারদের। আগেই রেজিস্ট্রেশন পর্ব শেষ করা হয়েছিল। আর রেজিস্ট্রেশন করা ক্রিকেটারদের গতকাল ডাকা হয় ব্যাটে–বলে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। গতকাল অনূর্ধ্ব–১৪ এবং ১৬ বছর বয়সীদের পরখ করা হয়। এই দুই বিভাগে প্রায় পাঁচ শতাধিক ক্রিকেটার হাজির হয়েছিল মাঠে। যেখানে অনূর্ধ্ব–১৪ বছর বয়সী দেড়শর মত আর অনূর্ধ্ব–১৬ বছর বয়সী সাড়ে তিনশর মত ক্রিকেটার ছিল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড মনোনীত কোচরা সেখান থেকে দুই বিভাগে একশ জনকে বাছাই করেছে। ব্যাটসম্যানরা মোট ১৬টি বল মোকাবেলা করার সুযোগ পেয়েছে। আর সেখান থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে দুই বিভাগের একশ জন ক্রিকেটারকে। এই একশ জনের আবার ডাক্তারী পরীক্ষা হবে বয়সের বিষয়টা চুড়ান্ত করার জন্য। সেখান থেকে আরো কমিয়ে গঠন করা হবে আরেকটি দল। যাদেরকে নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষনের পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টে খেলানো হবে। ক্ষুদে এই সব ক্রিকেটারদের বাছাই করার দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নিযুক্ত চট্টগ্রাম জেলা কোচ মাহবুবুল করিম মিঠু জানিয়েছেন মুলত এই পদ্ধতিতেই ক্রিকেটারদের প্রাথমিক বাছাই কার্র্যক্রম পরিচালনা করা হয়। মুলত এই সব ক্ষুদে ক্রিকেটারদের বেসিকটা কেমন সেটাই পরখ করা হয়। নাহয় এত ক্রিকেটার নিয়ে ক্যাম্প করতে গেলে অনেক সময়ের ব্যাপার। তবে আশার কথাও শুনিয়েছেন মিঠু। নিজে একেবারে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট থেকে উঠে আসা ক্রিকেটার হিসেবে বুঝতে পারেন কোন ক্রিকেটারের মধ্যে কি আছে। বেশ কিছু সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারের সন্ধানও পেয়েছেন বলে জানান মিঠু।
মিঠুর সাথে আরো রয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কোচ মোমিনুল হক, ক্রিকেট কোচ মাসুম উদ দৌলা এবং রেজাউল করিম রাজিব। আজ অনূর্ধ্ব–১৮ বছর বয়সীদের পরখ করা হবে। এবারের বাছাই পর্ব থেকে উৎরে আসা যে ক্রিকেটার ডাক্তারী পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে পারবে তাদের সাথে যোগ হবে আগের বছরে স্ব স্ব বিভাগে যাদের বয়স রয়েছে তারা। সব মিলিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী একটি পরিকল্পনার মাধ্যমে জেলার ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার যে পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন কোচরা। চট্টগ্রামের ক্রিকেট নিয়ে এক সময় গর্ব করা হলেও এখন ক্রমশ কেমন যেন পিছিয়ে পড়ছে চট্টগ্রাম। বলা হয়ে থাকে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে হলে তৃনমূল পর্যায় থেকে ক্রিকেটার তুলে আনার কোন বিকল্প নেই। গতকাল এই ক্রিকেটার বাছাই কার্যক্রম উদ্বোধন করতে গিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন বলেন আমরা চেষ্টা করছি এই বাচ্চাদের মধ্য থেকে আগামী দিনের ক্রিকেটার বের করে আনতে। কারন এদের মধ্যেই নিহিত রয়েছে চট্টগ্রাম তথা দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত। তিনি বলেন আমাদের কোচরা যেভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবে সেভাবেই ক্ষুদে ক্রিকেটাররা কোচদের নির্দেশনা অনুসরন করে। তিনি বলেন কঠোর পরিশ্রম ছাড়া আজকের দিনে ক্রিকেটার শুধুই নয়, কোন কিছুই হওয়া সম্ভব নয়। তাই সবার আগে ক্রিকেটারদের মদ্যে একাগ্রতা থাকতে হবে। নিজেদের লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে। আর সে লক্ষ্যের পাণে অবিচল আস্থা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা সব ধরনের সহযোগিতা এবং সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটের আহবায়ক আলহাজ্ব আলি আব্বাসের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিজেকেএস যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ক্রিকেট কমিটির সম্পাদক আবদুল হান্নান আকবর, নির্বাহি সদস্য সৈয়দ আবুল বশর সহ কর্মকর্তাবৃন্দ।