আওয়ামী লীগের সম্মেলন কাল

বড় পরিবর্তন আসছে না এবার

| শুক্রবার , ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন কাল শনিবার। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এবারের সম্মেলনে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় তুলে ধরা হবে। এই বিষয়টি সামনে রেখেই সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে- উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসার পর আধঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে।

এবারের জাতীয় সম্মেলনে সারাদেশ থেকে প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর এবং লক্ষাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেবেন। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ১১টি উপকমিটি কাজ করছে। এদিকে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠন করা হলে সেখানে বড় ধরনের রদবদল না হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনের দুই দিন আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠান স্থলের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।

২২তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন মুখ আসছে কিনা- এ প্রশ্নে কাদের বলেন, এবারের সম্মেলনে যে কমিটি হবে, সেখানে তেমন একটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। আমরা পরবর্তী সম্মেলনে… নির্বাচনের পর, আগামও করতে পারি, সে রকমও চিন্তা ভাবনা আছে। তখন একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হবে। আপাতত বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের ব্যাপারে ভাবছি না।

কমিটিতে বিতর্কিতরা বাদ পড়বে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা কেউ পারফেক্ট মানুষ না, ভুল-ত্রুটি নিয়েই মানুষ। পারফেক্ট কেউ না, কাজেই পূর্ণতা খুঁজতে গেলে অনেক কিছুই চিন্তা ভাবনা করতে হবে। বিতর্কিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে আমাদের চিন্তা ভাবনা আছে। তৃতীয় মেয়াদে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, সভাপতি আমাদের অপরিহার্য; যিনি সভাপতি আছেন, তিনি আমাদের ঐক্যের প্রতীক। কাউন্সিলরদের একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে তাকে (শেখ হাসিনা) সমর্থন করবে না। কাজেই এই নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকেরই ইচ্ছা থাকতে পারে। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল। আমার জানা মতে, দশজন অন্তত প্রার্থী আছে, যারা সাধারণ সম্পাদক হতে চায়। কাজেই কে হবেন সেটা নেত্রীর ইচ্ছা এবং কাউন্সিল অধিবেশনে সেখানে কাউন্সিলরদের মতামতে এর প্রাতিফলন ঘটবে। আমি এই মুহূর্তে কোনো প্রেডিকশনে যেতে পারি না। সময় এখনও ম্যাচিউর হয়নি।

সম্মেলন চ্যালেঞ্জিং টাইমে হচ্ছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাব। এবারের সম্মেলন হবে চ্যালেঞ্জিং টাইমে। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় আমরা যে সংকটে আছি, এই সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে আমাদের এই সম্মেলন। সম্মেলনে ব্যাপক জনসমাগমের প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, সুসংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই দেশকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে জাতির কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সুশৃক্সখল সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ গড়ে তুলতে প্রস্তুত। আমরা প্রস্তুত আগামী নির্বাচনের পর সরকার পরিচালনার জন্য।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, কেন্দ্রীয় সদস্য সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম, আনোয়ার হোসেন, রিয়াজুল কবির কাউসার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসসহ আওয়ামী লীগ নেতারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১১শ’ কাউন্সিলর ও ডেলিগেট যাচ্ছেন চট্টগ্রাম থেকে
পরবর্তী নিবন্ধমিটারগেজের দেড়শ কোচের প্রথম চালান আসছে চলতি সপ্তাহে