অস্তিত্বহীন দলের সাথে মিটিং বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রকাশ

মহিলা আওয়ামী লীগের মানববন্ধনে তথ্যমন্ত্রী

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৪ জুন, ২০২২ at ৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি যেসব দলের সাথে মিটিং করছে বাস্তবে ওইসব দলের কোনো অস্তিত্ব নেই। অস্তিত্বহীন দলের সাথে মিটিংয়ের মাধ্যমে বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বটাই প্রকাশ পাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশে পণ্যের মূল্য নিয়ে কথা বলছেন। অপরদিকে সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের ফোন করে পণ্য মজুদ করো, দাম বাড়াও, দেশে পণ্যের সঙ্কট সৃষ্টি করো বলে নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাদের ঘরানার ব্যবসায়ীরাসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা এই বার্তা পেয়ে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলোয়ারা ইউসুফের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা শামীমা হারুন লুবনার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ।

. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি নানা ধরণের বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতিদিন বিএনপি বিভিন্ন দলের সাথে মিটিং করছে। তাদের সাথে মিটিংয়ে যে সব দল হাজির হয়, এ সব দল যে দেশে আছে এই মিটিংয়ের পর মানুষ জানতে পারে, এধরণের একটি দল দেশে আছে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন দেশে নানা ধরণের পার্টি আছে। রাতের বেলা মানুষ গুম করেন এমন একটা পার্টি, মরিচের গুড়া মারে সেটা একটা পার্টি, রাতের বেলা মলম মেখে দেয় সেটাও একটা পার্টি। সভাপতি থাকলে সেক্রেটারি নাই সে ধরণের পার্টিও আছে। নানা ধরণের পার্টির সাথে বিএনপি মিটিং করছে।

তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নাকি ডানবাম সবার ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ডানবাম অতিডান অতিবাম সবার ঐক্য করেছিলো। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা নির্বাচনও করেছিলো। ফলাফল বিএনপির ঘরে মাত্র পাঁচটি আসন। সুতরাং এইবারও সর্বোচ্চ সংখ্যক দলের সাথে মিটিং করেও গতবারের চেয়ে বেশি ভালো ফল হবে বলে জনগণ মনে করে না।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, নির্বাচন পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকবো। যদি তারা আবার বিশৃক্সখলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর হস্তে তাদের আমরা প্রতিহত করবো।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে বিএনপিজামাত তাদের দোসরদের নিয়ে বিশৃক্সখলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসীদের সমাবেশ ঘটিয়ে অছাত্র ও ছাত্রদের বাবাদের সমাবেশ ঘটিয়ে সেখানে তারা স্লোগান দিয়েছে পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে তারা দুটো জিনিষ প্রমাণ ও স্বীকার করেছে। একটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে হয়েছে। আরেকটি কথা বলেছে তারা, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এই দেশের গণমানুষ ও খেটে খাওয়া মানুষের দল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে সবসময় ছিল, রাজপথে আছে। ঢাকাচট্টগ্রামে আমাদের মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের কর্মীরা মাঠে নেমেছেন। বিএনপিজামাতের সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের নারী কর্মীরাই যথেষ্ট।

তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনরাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। ইউরোপে এক ইউরোর তেল চার ইউরোতে বিক্রি হচ্ছে। এক ইউরোর রুটি দুই ইউরোতে বিক্রি হচ্ছে। সেখানে কোনো কোনো খাদ্যপণ্যের দাম দুই থেকে তিনশ’ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যুদ্ধ ও আমদানি নির্ভর পণ্যের অজুহাত দিয়ে কিছু কিছু মজুতদারি চালসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য মজুত করছে। আমাদের সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করেছে।

প্রয়োজনে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুধু মামলা, জরিমানা নয় প্রয়োজনে তাদের গ্রেপ্তারও করা হবে। সুতরাং কেউ মজুতদারি ও আড়তদারি করে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির অপচেষ্টা চালাবেন না।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা এড. বাসন্তী প্রভা পালিত, সৈয়দা রিফাত আকতার নিশু, রেহেনা ফেরদৌস, খালেদা আক্তার চৌধুরী, রোকসানা নাছরিন, ফাতেমা বেগম, এড. পাপড়ি সুলতানা, রেজোয়ানা শারমিন, এড. রাহেলা বেগম রেখা প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিদ্দিক আহমেদের জ্ঞানের গভীরতা পরিমাপ করা সম্ভব নয়
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬