অসহায়দের সহায়তা করা সামর্থ্যবানদের কর্তব্য

মোহাম্মদ ওয়াহিদ মিরাজ | বুধবার , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

শীতকাল। পুরোপুরি জেঁকে বসেনি, তবে হিমেল হাওয়ায় এর প্রকোপ খুব সহসায় আরো বৃদ্ধির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি বছরেই আমাদের দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও শীতার্ত মানুষেরদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়, যা কয়েকটি মানবিক কাজের মধ্যে অন্যতম। তবে সচেতন সংগঠন বা ব্যক্তিগণ ইতোমধ্যে এমন মহতি কাজ শুরু করলেও অনেককেই দেখা যায় যে, “দিব, দিচ্ছি” করে করে শীতকাল প্রায় যায় যায় অবস্থাও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। শীতের মৌসুমে ব্যবহারের জন্য পুরোপুরি শীত আসার কিছু দিন আগেই এমন অসহায় মানুষের মাঝে সহায়তার ঢালি নিয়ে দাঁড়াতে পারলে অসহায়গণ আরো বেশি উপকৃত হবে তথা শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে পারবে। “প্রচারেই প্রসার”এমন মনমানসিকতা সম্পন্ন মানুষকে সাধারণত প্রচার মাধ্যম তথা জনগণকে দেখানোর জন্য এমন নিম্নমানের শীতবস্ত্রও দিতে দেখা যায় যে, তাদের দেয়া কাপড় এক সঙ্গে কয়েকটি গায়ে জড়ালেও শীত শরীর থেকে দূরে যেতে চায় না, তথা শরীরেই আলিঙ্গন করে থাকে। তবে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, সৃষ্টিকর্তা অন্তর্যামী অর্থাৎ বাহ্যিকতা নয়, মনের অবস্থার উপর নির্ভর করে পুরস্কার দেন বা দিবেন। বস্ত্রের অভাবে জ্বলন্ত চুলায় বা খোলা জায়গায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহানোর সময়ে আমাদের দেশের অনেককে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সম্মুখীনও হতে হয়। এর ফলে ব্যক্তির পাশাপাশি দেশেরও আর্থিক ক্ষতি হয়। মধ্যবিত্ত ব্যক্তিগণ চক্ষুলজ্জার কারণে জনসম্মুখে লাইন ধরে এসব বস্ত্র বা অনুদান গ্রহণ করা হতে বিরত থাকতে দেখা যায় ফলে তাদেরকে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়। কাজেই সৎ মানসিকতা সম্পন্ন দানবীর ব্যক্তিগণ কর্তৃক সর্বাগ্রে এমন মধ্যবিত্ত মানুষদের মাঝে সহায়তার হাত প্রসারিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এদের কষ্ট অনেকটা লাঘব হবে, বস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ সার্থক হবে মর্মে আমি মনে করি।
আবার এমন দানের কাপড় বিশেষ করে ফুটপাতে বসবাসকারী অনেককে বিক্রয় করতেও দেখা যায়। তাই সতর্কতার সঙ্গে বিতরণের কাজ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে প্রকৃত অসহায়গণ লাভবান হবে। প্রত্যেক ধর্মগ্রন্থেই সামর্থবানদের অর্থে অসহায়দের দাবি রয়েছে মর্মে উল্লেখ রয়েছে। তাই সৃষ্টিকর্তার আদেশ পুরোপুরি পালন করা আমাদের অবশ্যই কর্তব্য। নিজে আর্থিকভাবে অক্ষম অনেকে এমন মানুষদের কষ্ট দেখে নিজের অতিরিক্ত কাপড় বিতরণ করলেও আবার কাপড় বিতরণের নামে চাঁদা বা অনুদান তুলে তা থেকে কিছু হাতিয়ে নেয়ার মতো ভুঁইফোড় সংগঠনের অস্তিত্বও আমাদের দেশে রয়েছে। আমাদের পুরোপুরি সচেতনতাই সমাজের অসহায় মানুষদের মাঝে অনুদান বিতরণের উদ্যোগ সফল করবে মর্মে আমি দৃঢ়চিত্তে বিশ্বাস করি। লেখক : সংবাদকর্মী

পূর্ববর্তী নিবন্ধনীলিমা মেঘের আড়ালে
পরবর্তী নিবন্ধসম্পর্কের নির্ভরতা