অর্থের ঝনঝনানি কাতার বিশ্বকাপে

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২২ at ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ

কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপ মাঠে গড়াচ্ছে আজ। এই বিশ্ব আসরে মাঠ মাতাতে ব্রাাজিল ও আর্জেন্টিনা সহ একে একে দল এখন মরুর দেশটিতে। ছোট্ট এই দেশটিতে যেন ফুটবলারের মেলা বসেছে। আয়োজন থেকে শুরু করে সবকিছুতে সবাইকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে কাতার। এবারের বিশ্বকাপ আসরে রেকর্ড পরিমাণ প্রাইজমানি নিয়ে হাজির হয়েছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। যারা এই ট্রফি জিতবে তারা স্বপ্নের ট্রফির সাথে টাকার বস্তা নিয়ে দেশে ফিরবে। এবারের বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল কত টাকা পাবে প্রাইজমানি হিসেবে তা প্রকাশ করেছে ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। ফিফা জানিয়েছে এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৩২ দলের জন্য প্রাইজমানি নেই। তবে প্রাইজমানি থাকছে শেষ ১৬ পর্ব নিশ্চিত করা প্রত্যেক দলের জন্য। আর এই প্রাইজমানি কত তা শুনলে যে কারও চোখ কপালে উঠবে।

ফিফা জানিয়েছে এবারের ফুটবল বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৩৮ মিলিয়ন ইউরো। যা বাংলাদেশী টাকায় ৪০৪ কোটি টাকারও বেশি । আগের আসরে চ্যাম্পিয়ন দলের পুরষ।কার ছিল ৩৮ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩৮৮ কোটি টাকার বেশি। এবারের আসরে রানার্সআপ দল পাবে প্রায় ২৯০ কোটি টাকা। আগের আসরে রানার্স আপ দলের পুরষ্কার ছিল ২২৭ কোটি টাকার মত। এতেই বুঝা যায় কতটা অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপে দল গুলোর পেছনে।

এবারের আসরে মোট প্রাইজ মানি গিয়ে দাড়াচ্ছে ৩০০০ কোটি টাকার মত। এবারের আসরে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান পাওয়া দল পাবে যথাক্রমে ২৬০ ও ২৪০ কোটি টাকা। এরপর কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া চার দলের প্রত্যেকে বাড়ি ফিরবে ১৫.৪০ মিলিয়ন ইউরো নিয়ে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬৩ কোটি ৮২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। শেষ ১৬ পর্ব নিশ্চিত করা ৮ দলের প্রত্যেকে পাবে ১১.৭ মিলিয়ন ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১২৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা । কাজেই এবারের বিশ্বকাপে পুরস্কারের অর্থও ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সব রেকর্ড।

২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল পেয়েছিল ৩৮ মিলিয়ন ডলার। আর রানার্স আপ দল পেয়েছিল ২৮ মিলিয়ন ডলার। তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দল পেয়েছিল ২৪ মিলিয়ন ডলার। চতুর্থ স্থান অর্জনকারী দল পেয়েছিল ২২ মিলিয়ন ডলার। যে চারটি দল কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল তারা প্রত্যেকে পেয়েছিল ১৬ মিলিয়ন ডলার করে। আর দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়া দলগুলো পেয়েছিল ১২ মিলিয়ন ডলার করে। সে আসরে প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া দল গুলোকেও পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল। সেবার গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়া প্রত্যেকটি দল পেয়েছিল ৮ মিলিয়ন ডলার করে। তবে এবারে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া দল গুলোর জন্য কোন পুরস্কার নেই।

এর আগে ২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দল পেয়েছিল ৩৫ মিলিয়ন মার্কিণ ডলার। আর রানার্স আপ দল পেয়েছিল ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলকে সেবারেও পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া দল গুলো পেয়েছিল ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ।

দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ ১৬ দলের পর্বে হেরে যাওয়া দলগুলো পেয়েছিল ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার । কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়া চারটি দল পেয়েছিল ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে । বিশ্বকাপের সে আসরের জন্য ক্লাব থেকে বিদায় নেওয়ার সময় খেলোয়াড়রা যেসব ক্লাবে খেলে থাকেন সেসব ক্লাবকে খেলোয়াড়দের বীমা এবং অন্যান্য খরচ বাবদ দেওয়া হয়েছিল ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সে আসরে সর্বমোট ৫৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ খরচ করেছিল ফিফা পুরস্কার হিসেবে। যা ছিল একটি নতুন রেকর্ড। এর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে ফিফা পুরস্কার খরচ করেছিল ৪২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এবারে সে অর্থ বেড়ে দাড়িয়েছে ৩০০০ মিলিয়ন ডলারে। যা সর্বকালের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধম্যারাডোনা কন্যার আবেদন
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্বকাপের বাঁশিওয়ালারা