অনিশ্চিত দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে মেলেনি উত্তর

| মঙ্গলবার , ১১ মে, ২০২১ at ৪:১২ পূর্বাহ্ণ

টিকার দ্বিতীয় ডোজের কী হবে- তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন অনেকেই। এদের একটি বড় অংশ প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন মার্চের শেষভাগে। এখন দ্বিতীয় ডোজের এসএমএস কবে পাবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন তারা। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এ পর্যন্ত দেশে যত মানুষকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মত মজুদ হাতে নেই। ঘাটতি প্রায় ১৫ লাখ ডোজের মত। সেই ঘাটতি পূরণে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে, কিন্তু নিশ্চয়তা মেলেনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা ভারত ছাড়াও অন্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যেখানে অক্সফোর্ডের টিকা মজুদ আছে, সেসব জায়গায় আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করছি। চিঠিপত্র দেওয়া হচ্ছে। ভাগ্য ভালো হলে আমরা তাড়াতাড়ি পেয়ে যাব। টিকার জন্য ভারতকেও প্রতিনিয়ত চাপ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের হাতে আরও এক মাস সময় আছে। দেখি এই সময়ের মধ্যে আমরা টিকা আনতে পারি কি না।
দ্বিতীয় ডোজে অন্য টিকা নেওয়া যাবে : অঙফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কেনা টিকা হাতে না পেয়ে সরকার এখন মরিয়া হয়ে অন্য উৎস থেকে টিকা খুঁজছে। এরইমধ্যে রাশিয়ার স্পুৎনিক ভি এবং চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের বিবিআইবিপি-সিওরভি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন অনেকেই জানতে চাইছেন, প্রথম ডোজে যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজে অন্য টিকা নেওয়া যাবে কি না। এ প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিসিডির লাইন ডিরেক্টর এবং মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, তাদের একটি কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কাজ করছে। কমিটি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। কারণ এসব বিষয় নিয়ে কোনো ডেটা নাই, কোনো রেকমেন্ডেশন নাই। বড় বিষয় হচ্ছে, আমাদের কাছে তো টিকাই নাই। যখন (অন্য) টিকা আসবে, তখন প্ল্যান করা হবে, কমিটি তখন সিদ্ধান্ত নেবে যে টিকা মিঙ করা যাবে কি না। তবে এক ব্যক্তিকে দুই ধরনের টিকা দেওয়ার ‘আইডিয়া’ নিয়ে খুব একটা আশাবাদী না আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, প্রথম ডোজ দেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অন্য কোম্পানির টিকা কার্যকর কি না- তা এখনও প্রমাণিত না। কাজেই দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাই দিতে হবে। অন্য টিকার সঙ্গে মিঙ করা যায় কি না সেটি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে, ফলাফল পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন পর্যন্ত একই সুপারিশ করেছে। অর্থাৎ, প্রথ ডোজে যিনি যে টিকা নিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজও সেটাই নেবেন।
টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তায় থাকা ব্যক্তিদের আরেকটি প্রশ্ন হল, কতটা দেরি এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হল, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দুই ডোজ আট থেকে ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে নিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। সেই উদাহরণ টেনে ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলছেন, যাদের আট সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজের তারিখ ছিল, তারা আপাতত তা না পেলেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আরও চার সপ্তাহ তাদের হাতে থাকছে। আর ডা. মুশতাক বলছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা একেবারেই আসবে না- এমনটা ভাবার কারণ নেই। মাসখানেক পর পেলেও দ্বিতীয় ডোজ যাদের প্রাপ্য, তারা দিতে পারবেন। এই টিকা প্রথম ডোজের পর তিন মাস অপেক্ষা করাই যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে করোনায় আরো ৪ জনের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশসহ চার দেশ থেকে ভ্রমণে আমিরাতের নিষেধাজ্ঞা